প্রতিবেদন : করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দাপটে গোটা বিশ্বেই ঝড়ের গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, গত সপ্তাহে গোটা বিশ্বে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। হু তার সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে, গত সপ্তাহে গোটা বিশ্বে প্রায় দেড় কোটি মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই এক সপ্তাহে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ।
হু’র সাপ্তাহিক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, আফ্রিকা ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশগুলিতে। তুলনায় আফ্রিকার দেশগুলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১ শতাংশ কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) র প্রধান ড. ট্রেড্রস অ্যাডানাম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, গোটা বিশ্বে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দাপট সবচেয়ে বেশি। আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন অনেকেই ফের এখন ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন। টিকা নেওয়ার পরেও বহু মানুষকে ওমিক্রন আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন ২০২১-এর এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি ৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি গোটা বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ লক্ষেরও বেশি। অর্থাৎ দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় এবার তিন গুণেরও বেশি মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন :-মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী
হু’র পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন দেশে জোর গতিতে টিকাকরণ চললেও বিশ্বের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশই এখনও কোন টিকাই পায়নি। এই তথ্য যথেষ্ট উদ্বেগে রেখেছে হু-কে।
হু প্রধান আরও বলেছেন, ওমিক্রনকে সাধারণ সর্দি-কাশির মত কোনও রোগ ভেবে গুরুত্ব না দিলে মানুষ বড় ভুল করবে। তাই করোনার হাত থেকে বাঁচতে সকলকেই করোনাজনিত সব ধরনের বিধিনিষেধ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মেনে চলতে হবে। এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছে ওমিক্রনের হাত ধরেই হয়তো এই মহামারির শেষ হতে চলেছে। যদিও এব্যাপারে শেষ কথা বলার সময় আসেনি। বিশেষজ্ঞদের মত, ওমিক্রনের কারণে এক সপ্তাহের মধ্যে হয়ত সংক্রমণ সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছবে। কিন্তু তারপরেই সংক্রমণ স্বাভাবিক নিয়মেই ক্রমশ কমে আসবে।
টিকার বিষয়ে হু প্রধান আরও বলেছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট একটি বিপজ্জনক ভাইরাস। বিশেষ করে যাদের টিকা দেওয়া হয়নি বা যারা এখনও টিকা নেয়নি তাদের ক্ষেত্রে। করোনার ওমিক্রন প্রজাতি ডেল্টার মত জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি না করলেও এটি একটি ‘বিপজ্জনক’ ভাইরাস। বিশেষ করে যারা এখনও টিকা নেননি তাদের জন্য। আফ্রিকায় টিকাকরণের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হু প্রধান। তিনি বলেন, আফ্রিকায় এখনও ৮৫ শতাংশের বেশি মানুষ টিকার একটি ডোজও পাননি। যা খুবই উদ্বেগের। আফ্রিকায় টিকার হার দ্রুত করতে আগামীদিনে কোভ্যাক্স-এর আরও ১ বিলিয়ন ডোজ পাঠানো হবে। বিশ্বের ৯০টি দেশ এখনও টিকাকরণের ৪০ শতাংশের লক্ষ্যও ছুঁতে পারেনি। এই দেশগুলির মধ্যে ৩৬টি দেশ আবার মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম লোককে টিকা দিয়েছে।