বাংলা সঙ্গীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁর সুরের মুর্ছনায় মজে যায় ৮ থেকে ৮০। বয়স ৯০ পেরিয়েছে। কিন্তু যেভাবে প্রতিবাদ জানালেন তা যে কোন যুবক যুবতীর মনের জোর কে হার মানাবে। কেন্দ্রের ‘পদ্মশ্রী’ প্রত্যাখ্যান করলেন সঙ্গীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তিনি সঙ্গীতের পিছনে ব্যয় করেছেন গোটা জীবন। গান গেয়েছেন একাধিক ভাষায়। অথচ এতদিন সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান জোটেনি তাঁর কপালে, তাহলে এখন কেন ?
আরও পড়ুন – কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের
তাই নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান ফিরিতে দিলেন প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীত শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তিনি মনে করছেন, বড্ড দেরী হয়ে গিয়েছে। তাঁর চেয়ে কম বয়সিরাও পেয়ে গিয়েছেন সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘পদ্মশ্রী’। তাই এখন আর সম্মানের প্রয়োজন নেই বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে ফোনেই জানিয়ে দিয়েছেন শিল্পী। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন পরিবারের প্রত্যেকে।
মঙ্গলবার ‘পদ্মশ্রী’ প্রাপকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের (Sandhya Mukhopadhyay) নাম রয়েছে। কেন্দ্রের তরফে তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর আজই তাঁর লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে ফোন আসে দিল্লির তরফে। জানানো হয় তিনি পাচ্ছেন পদ্মশ্রী সম্মান। কিন্তু আচমকাই ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা গলাকে থামিয়ে দেন সন্ধ্যা দেবী। অপর প্রান্ত থেকে কথা শেষ হওয়ার আগেই শিল্পী জানিয়ে দেন, তিনি ‘পদ্মশ্রী’ প্রত্যাখ্যান করছেন। এই সম্মান নিতে তিনি গ্রহণ করবেন না।
শিল্পী স্পষ্ট জানিয়েছেন এতদিন পর তাঁর আর কোন সম্মান চাইনা। দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান যদি তাঁকে দিতেই হত তাহলে এত দেরী করে কেন ? তাঁর সঙ্গীত সাধনা একদিনের নয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের (Sandhya Mukhopadhyay) কণ্ঠে হতাশা আর অপমানের বেদনা। দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে তিনি হিন্দিতেই তাঁর বক্তব্য জানিয়ে দেন।
তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে কেউ পদ্মশ্রী দেয় ? এরা জানে না আমি কে ! নব্বই বছরে আমায় শেষে পদ্মশ্রী নিতে হবে ? আর এই ফোন করে বললেই চলে যাব আমি ? শিল্পীদের কোনও সম্মান নেই আর।’’