লন্ডন: আজকের পৃথিবীতে প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে প্লাস্টিক৷ প্রকৃতির উপর এর ভয়ঙ্কর কুফল কমবেশি আমাদের জানা। সুয়েজ লাইন থেকে শুরু করে একের পর এক নদী ভরাট হচ্ছে প্লাস্টিকে। কোটি কোটি প্লাস্টিক বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমুদ্রতল৷ পরিবেশ- প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম, বাস্তুতন্ত্র যাচ্ছে বদলে। প্রাণিজগতে ভয়ানক ক্ষতি ডেকে এনেছে প্লাস্টিক। আর এবার এই প্লাস্টিক নিধনে মিলেছে সাফল্য। যা কার্যকর হলে পরিবেশের জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে।
আরও পড়ুন-আলোচনা ছাড়া বিল পাশ, সোমবার থেকে ফের উত্তাল হবে সংসদ
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এমন এক ফাংগাস বা ছত্রাক, যা প্লাস্টিক খেয়ে সাবাড় করছে৷ প্লাস্টিক বিপর্যয় রোধ করার জন্য বহুদিন ধরে সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনই এক গবেষণায় দুর্দান্ত সাফল্য মিলেছে। দেখা যাচ্ছে, প্লাস্টিক খেয়ে সাবাড় করছে একধরনের ফাঙ্গাস। ব্রিটেনের বিজ্ঞানী সামান্থা জেনকিন্স ও তার সংস্থা বায়োহেম এখন এই ফাঙ্গাস নিয়ে মূল কাজটি করছেন। এই ফাঙ্গাসকে কীভাবে আরও বেশি উন্নয়নের কাজে লাগানো যায় তার চেষ্টা করছেন তিনি। বিজ্ঞানী সামান্থা জেনকিন্স এখন তাঁর আবিষ্কৃত ফাঙ্গাস পিইটি আর পলিইউরিথেনের ওপর পরীক্ষা করছেন। সংবাদ সংস্থা বিবিসিকে তিনি জানিয়েছেন, ‘এটা খুবই সুখকর যে প্রাকৃতিকভাবে প্লাস্টিক নিধনের খোঁজ মিলেছে। ওই ফাঙ্গাসকে প্লাস্টিক দিলেই সেগুলি প্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে। তারপর তা জন্ম দিচ্ছে আরও নতুন ফাঙ্গাসের। আর এ থেকে আমরা নানারকম বায়ো-মেটিরিয়াল বা জৈবপদার্থ তৈরি করতে পারছি। এগুলি নানা কাজে লাগানো যাবে। খাবার তৈরি থেকে শুরু করে পশুর জন্য ফিডস্টক তৈরি, এমনকি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির কাজেও লাগছে এটি।
আরও পড়ুন-সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়াদের নিয়ে কলকাতা ফিরছেন অভিষেক
সামান্থা জেনকিন্স বায়োহম নামে এক বায়ো-ম্যানুফ্যাকচারিং ফার্মের প্রধান বায়োটেকনোলজিস্ট। তিনি তাঁর সংস্থার একটি গবেষণা প্রকল্পের কাজের জন্য বিভিন্নরকম ফাঙ্গাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে এর মধ্যে একটি ফাঙ্গাস এমন একটা কাণ্ড করে বসে যে তাঁদের গবেষণার গতিপথ ঘুরে যায় অন্যদিকে। তাঁদের পরীক্ষাগারে একটি জার ভর্তি ছিল শস্যকণায়। তার উপরে দলা পাকানো ফাঙ্গাস গজিয়েছিল। তিনি দেখেন , জারটি বায়ুরোধী করার জন্য যে প্লাস্টিকের স্পঞ্জ দেওয়া ছিল ফাঙ্গাস সেগুলিকে খাদ্যদ্রব্যের মতোই খেয়ে ফেলছে। এই চমকপ্রদ ঘটনা সামান্থার গবেষণাকে নিয়ে চলে আসে প্লাস্টিক নিধনের দিকে। তাঁর দল এখন কাজ করছে কীভাবে এই ফাংগাসের আরও উন্নত ও শক্তিশালী প্রজাতি তৈরি করা যায়। তাঁরা আশা করছেন, এই অাবিষ্কার প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে পরিবেশকে একদিন চিরতরে মুক্ত করতে পারবে।