সংবাদদাতা, কাঁথি : পুরসভা নির্বাচনের মুখেই বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি (BJP)। কাঁথি পুরসভার দুই দাপুটে প্রাক্তন কাউন্সিলর-সহ পাঁচ শতাধিক কর্মী-সমর্থক বিজেপি থেকে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে (Trinamool Congress)। আরও তিন প্রাক্তন কাউন্সিলর বিজেপি (BJP) থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে (Trinamool Congress) আসার জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন। ভোটের মুখে তাঁদের আবেদনও তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটি বিবেচনা করছে বলে প্রকাশ। তৃণমূল কংগ্রেসে আসা দুই প্রাক্তন কাউন্সিলর হলেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অতনু গিরি (পানু) ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তরুণ কুমার বেরা (সোনা)। দু’জনেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অনুগামী হিসেবে দীর্ঘদিন দাপটের সঙ্গে কাঁথি পুরসভায় কাজ করেছেন। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি রাজ্যের বিরোধী দলনেতার হাত ধরে যে কয়েকজন কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অতনু ও তরুণ অন্যতম। সেই হিসেবে এই দুই প্রাক্তন কাউন্সিলরের ঘর ওয়াপসি হল ১ ফেব্রুয়ারি রাতে।
আরও পড়ুন-কড়া পদক্ষেপ পুলিশের, আনফিট ৪৫ বাস
এদিন কাঁথি চৌরঙ্গি মোড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে এই দুই প্রাক্তন কাউন্সিলরের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন কাঁথি ও এগরা পুরসভার নির্বাচন কমিটির অন্যতম সদস্য, পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। উপস্থিত ছিলেন, কাঁথি পুরসভার প্রশাসক হরিসাধন দাস অধিকারী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান প্রমুখ। এক বছরের মধ্যেই বিজেপি সম্পর্কে এই প্রাক্তন কাউন্সিলরদের মোহভঙ্গ হওয়ার কারণ হিসেবে অতনু গিরি বলেন, “রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। বিজেপি সম্প্রদায়িক দল। মেরুকরণের রাজনীতি ও হিন্দু-মুসলিমের ভেদাভেদ ছাড়া বিজেপিতে কাজের পরিবেশ নেই। আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় জনসেবা করতে চাই। তাই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এলাম।” কয়েক মাস আগেই অতনু গিরি বিজেপির মধ্যে রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। জানা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে একবছর আগে বিরোধী দলনেতার হাত ধরে বিজেপিতে চলে যাওয়া আরও তিন প্রাক্তন কাউন্সিলর ভোটের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। তাঁরা সকলেই বিরোধী দলনেতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অনুগামী হিসেবে পরিচিত। তাঁদের মধ্যে একজন কাঁথি পুরসভার অত্যন্ত বর্ষীয়ান প্রাক্তন কাউন্সিলর রয়েছেন। মাত্র এক বছর আগে বিরোধী দলনেতার ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিলেও কয়েকদিন আগে তাঁকে বিজেপির জেলা কমিটির সম্পাদক করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করা অনেক নেতাই পদ্ম শিবিরের বর্তমান জেলা কমিটিতে স্থান পাননি। বিষয়টি নিয়ে আদি বিজেপি নেতাদের মধ্যে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। বিক্ষুব্ধ ওই বিজেপি নেতারাই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের প্রবল ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিধায়ক উত্তম বারিক বলেন, “রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পায়ের নিচ থেকে অনেক আগেই মাটি সরে গিয়েছিল। এখন একে একে ঘনিষ্ঠ বৃত্তের ইটগুলো ভেঙে পড়ছে। পুরসভা ভোটের মুখে প্রচারের আলো পেতে এই লোডশেডিং এমএলএ বড় বড় কথা বলছেন। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এই নেতার ফানুস ফেটে যাবে।”