করোনা রুখতে গোটা দেশে প্রায় বছর দেড়েক ধরে চলছে কড়া লকডাউন। এই লকডাউনের সময় সামনে এসেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা। দেখা গিয়েছে গ্রামাঞ্চল থেকে দলে দলে বহু শ্রমিক শহরাঞ্চলে আসেন কাজের জন্য। কিন্তু গ্রামাঞ্চলেই যদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায় তবে এই শ্রমিকদের গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয় না। এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় মহিলাদের অংশগ্রহণ নিয়ে সংসদে সোচ্চার হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে এক লিখিত প্রশ্নের মাধ্যমে তৃণমূল সাংসদ জানতে চান, গ্রামাঞ্চল থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের চলে যাওয়া ঠেকাতে কেন্দ্রের কি কোনও বিশেষ পরিকল্পনা আছে? শ্রমিকদের চলে যাওয়া ঠেকাতে গ্রামাঞ্চলে আরও বেশি করে কর্মসংস্থানের প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে কেন্দ্র কি আদৌ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে? যদি কেন্দ্র গ্রামাঞ্চল থেকে শ্রমিকদের চলে যাওয়া ঠেকাতে কোনও ব্যবস্থা নিয়ে থাকে তবে তার জন্য কি পরিমান অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে? তৃণমূল সাংসদের এই প্রশ্নের উত্তরে গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম চালু করা হয়েছে।
এই প্রকল্পে গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি পরিবারের একজন সদস্যকে বছরে ১০০ দিন কাজ দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে ২০২০-২১ সালে ১১.১৯ কোটি মানুষকে কাজ দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৬ অগাস্ট পর্যন্ত ৭.০১ কোটি মানুযকে কাজ দেওয়া হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পে এক ১ লক্ষ ১১ হাজার ১৭৯.৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এখনো পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০৫.২৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। মন্ত্রী আরও জানান, গ্রামাঞ্চলের প্রত্যেকটি পরিবারের মাথার উপর ছাদ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ২.৯৫ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-ফের পিছলো পেগাসাস মামলার শুনানি, সুপ্রিম কোর্টের কাছে সময় চাইল কেন্দ্র
মন্ত্রী আরও জানান, গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করতে কেন্দ্র একাধিক পরিকল্পনার কাজ চালাচ্ছে। গ্রামীণ এলাকার মানুষ যাতে নিজেরাই বিভিন্ন স্বনিযুক্তি প্রকল্পে যুক্ত হতে পারেন সেজন্য দেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। এই সমস্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ২৬৯১ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পাশাপাশি চলতি বছরে এখনো পর্যন্ত ১১০১৫ জনকে প্রশিক্ষণের পর বিভিন্ন কাজ দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গ্রামীণ এলাকার মানুষ যাতে অর্থসংস্থান করতে পারেন সে জন্য গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের মত প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যও কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।