প্রতিবেদন : ২০২৪- এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কোমর বেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে রীতিমতো বেহাল অবস্থা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের। এদিকে তাঁর নামে রাজ্য বিজেপি থেকেই একের পর এক অভিযোগ জমা পড়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। অভিযোগ উঠছে সরকার ঠিকমত চালাতে পারছেন না তিনি। এহেন অবস্থায় শোনা যাচ্ছে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো হতে পারে বিপ্লব কুমার দেবকে। এমন জল্পনার মাঝেই বুধবার দিল্লি সফরে গেলেন বিপ্লব দেব। তাঁর হঠাৎ এই সফরে রাজনৈতিক মহলের অনুমান, পদ বাঁচাতে দিল্লি দরবারে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছেন সাধন পাণ্ডে, কথা বলছেন ইশারায়
২০২৩ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। তবে এখন থেকেই এই রাজ্যকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। নতুন করে সংগঠন তৈরির পাশাপাশি বহু কংগ্রেস, বাম এবং বিজেপির সুবল ভৌমিকের মতো নেতৃত্ব তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। আর ১৭ মাস পরে বিপ্লব দেবের সরকারকে উপড়ে ফেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল যে মূল প্রতিপক্ষ তা আন্দাজ করে সর্বশক্তি পাল্টা ময়দানে নেমেছে বিজেপি। এই ছবি ইতিমধ্যেই চোখে পড়েছে। এরই মাঝে বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যের নাগরিক সমাজও মুখ্যমন্ত্রীর কাজে প্রবল ক্ষুব্ধ। এই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও হিংসার ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। সম্প্রতি জেলা কাউন্সিলের ভোটেও বিজেপির খারাপ ফলের জন্য বিপ্লব দেবকে দায়ী করেছে নেতৃত্ব। সব অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে ত্রিপুরা ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপির পর্যবেক্ষক দল।
আরও পড়ুন-Tripura: এবার অভিষেক, ব্রাত্য সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ‘ভয় পেয়েছে বিজেপি’ বললেন কুণাল
সূত্রের খবর, যেভাবে বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়েছে তাতে বিপ্লবে খুশি নন দিল্লির নেতারা। তাঁকে সরিয়ে নতুন কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। তবে বিপ্লবের জায়গায় নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন সেটা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। ত্রিপুরার রাজপরিবারের সন্তান, বর্তমান উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মণকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আছেন ত্রিপুরার বিজেপি সভাপতি মানিক সাহা। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণের নামও চিন্তাভাবনায় আছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে আরো জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীপদ না পেলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন সুদীপ রায়বর্মণ। সবমিলিয়ে ত্রিপুরার পরিস্থিতি বেশ ঘোরালো। এই অবস্থায় গদি বাঁচাতেই বিপ্লব দেব দিল্লি দরবারে গিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। শোনা যাচ্ছে অমিত শাহ, জেপি নিড্ডার মত বেশ কিছু শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাৎ করবেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।