অনুপম সাহা, দিনহাটা : প্রাণ ফিরে পেয়েছে ক্লাসরুমটা। কোল ব্ল্যাকবোর্ড অপরিণত হাতে ছবি আঁকা। করিডোরে হুল্লোড়। ক্লাসটিচার ক্লারুমে ঢুকতেই ছোট ছোট হাতগুলো এগিয়ে এল নানরকমের ফুল নিয়ে। এরপরই তাদের ব্যাগ থেকে বেরল একের পর এক পোস্টার। তাতে লেখা, ‘ক্লাসরুম ফিরে পেয়ে আমরা খুশি’। আবেগে চোখে জল শিক্ষকদের। দিনহাটা মিশন গার্লস স্কুলের ক্ষুদে পড়ুয়াদের স্কুলের প্রতি ভালবাসা দেখে যেন পুরনো দিনে হারিয়ে গেলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।
আরও পড়ুন-বিরোধীদের অস্তিত্বই নেই বহরমপুর এবার তৃণমূলের
করোনা পরিস্থিতি তৎপরতার সঙ্গে মোকাবিলা করে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রাজ্যের বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রায় দুই বছর পর ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের ক্লাসরুম ফিরে পেল। পাড়ায় শিক্ষালয় শুরু হলেও ছোটদের ক্লাসরুমের ভেতর পঠনপাঠন হত না। এদিন ছাত্রীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। স্যানিটাইজ থেকে সমস্ত কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলের মধ্যে ছাত্রীদের প্রবেশ করানো হয়। দিনহাটা মিশন গার্লস হাইস্কুল গেট ও চত্বর বিভিন্ন রঙিন বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে এ-ছাড়া ক্লাসরুমে ঢোকার সময় ছাত্রীদের অভিনবভাবে অভ্যর্থনা করা হয়েছে। চন্দনের ফোঁটা, পুষ্পবৃষ্টি ও চকোলেট দিয়ে ছাত্রীদের ক্লাসরুমে স্বাগত জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-সাংসদকে কাছে পেয়ে উদ্দীপ্ত ভোটাররা, প্রার্থীরাও, দুই জেলায় প্রচার-ঝড় শতাব্দীর
এমনকী ক্লাসরুমে তাঁরা নিজেরা ফিরতে পেয়ে “আহা কি আনন্দ ও আমরা আজ ক্লাসরুম ফিরে পেয়ে ভীষণ খুশি” এই ব্যানার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এক ছাত্রী জুঁই দেবনাথ বলেন, “আমরা এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলাম, আজ সহপাঠীদের ক্লাসরুমে পেয়ে আলাদা অনুভূতি হচ্ছে, এবার প্রত্যেকদিন স্কুলে আসব।” যাঁর এই অভিনব উদ্যোগ, তিনি স্কুলের এনএসকিউএফ বৃত্তিমূলক বিভাগের শিক্ষক শুভদীপ ভৌমিক বলেন, “মাঠে পঠনপাঠন খুব অসুবিধে হত।
ক্লাসরুম মন্দির, মন্দিরে এতদিন ভগবানের জায়গা ফাঁকা ছিল, কচিকাঁচারা আবার সেই মন্দিরে ফিরে এসেছে, এবার আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে শিক্ষার আলোয়। প্রার্থনা হবে, ঘণ্টা বাজবে। উফ! কি যে আনন্দ, বিদ্যালয় প্রাণ ফিরে পেলো।” স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুরাইয়া বেগম এহেন উদ্যোগকে প্রশংসা জানিয়েছেন।