অভিরূপ ভট্টাচার্য : দীর্ঘ অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল বিশ্ব অর্থনীতি। তারই মধ্যে ফের ঘনিয়ে উঠল যুদ্ধের মেঘ। ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবে ফের একবার বিপর্যয়ের আশঙ্কা অর্থনীতির আকাশে। যুদ্ধের প্রভাবে ইতিমধ্যেই ধস নেমেছে শেয়ার বাজারে (Share Market)। তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সোনার মতো মূল্যবান ধাতু থেকে শুরু করে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যেও বিপুল প্রভাব পড়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন এই দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের দীর্ঘ কূটনৈতিক আদান-প্রদান ও মজবুত বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই ভারতীয় অর্থনীতির ওপরেও ইউক্রেন যুদ্ধের কুপ্রভাবের আশঙ্কা করছেন বণিক মহল। যার জেরে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন এ রাজ্যের চা উৎপাদকরা। রাশিয়া ও ইউক্রেন, দুই দেশেই বিপুল পরিমাণে চা রফতানি করে ভারত। আমাদের দেশ থেকে যে পরিমাণ চা বিদেশে রফতানি করে তার ৪০ শতাংশই যায় রাশিয়া, ইউক্রেনে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এখন চা শিল্প বিপদের মুখে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাশিয়ার মোট চায়ের বাজার বছরে ২৪০ মিলিয়ন কেজির। ১৯৯২ সালের আগে পর্যন্ত এই পুরো চা ভারত রফতানি করত। ১৯৯২ সালের পর থেকে রুবেল ও রুপি নিয়ে সমস্যার জেরে চা রফতানিতে ভাগ বসায় শ্রীলঙ্কা ও কেনিয়া। ফলে প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে ভারতীয় চা। ২০২১ সালে ভারতে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ১৩২৯ মিলিয়ন কেজি। রফতানি হয়েছে ১৯৫ মিলিয়ন কেজি। গত বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত রাশিয়া, ইউক্রেন-সহ সিআইএস দেশগুলিতে চা রফতানি হয়েছিল ৩১.৮৭ মিলিয়ন কেজি। বাজার দর ছিল ৫৯৫ কোটি টাকা। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলছেন, চা রফতানি কমে গেলে দেশের বাজারেও চায়ের দাম কমবে। কারণ তখন চা বাইরে না গিয়ে দেশের বাজারেই (Share Market) ঘোরাফেরা করবে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের চা শিল্প। ভারত, তার শক্তির চাহিদার প্রায় ৮৬ শতাংশ অপরিশোধিত তেল হিসেবে আমদানি করে। এর ফলে এই সংকটের সময়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির মধ্যে একটি হতে পারে ভারত।