কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে কিছুটা দেরিতে হলেও শুরু হল আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা (International Kolkata Book Fair) । সোমবার, প্রথা মাফিক ঘণ্টা বাজিয়ে ৪৫তম কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই উদ্বোধন মঞ্চ থেকেই সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের নয়া নাম দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে ‘বইমেলা প্রাঙ্গন’ হিসাবেই পরিচিত হবে পার্কটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা ও বাংলাদেশকে এক সুতোয় বাঁধেন মমতা।
এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা আন্তর্জাতিক বইমেলা। দুই দেশে কোনও বিভেদ নেই। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মধুর। বাংলা ও বাংলাদেশের অন্তর এক। সীমানা দিয়ে দুই বাংলাকে আলাদা করা যায় না।” বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের সকলের শুভকামনাও করেন মমতা।
আরও পড়ুন – কলকাতা বই মেলায় ‘জাগো বাংলা’র স্টল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সকলকে কমপক্ষে একবার মেলায় আসার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর কথায় এটা বইবেলা। এবারের বইমেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১০টি বই প্রকাশ পেল। এদিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ বইমেলায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন সাংসদ দোলা সেন (Dola Sen), রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya), সুজিত বসু (Sujit Basu), কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ-সহ অনেকে। কলকাতায় আন্তর্জাতিক বইমেলার পাশাপাশি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হয়। আগামী বছর থেকে কলকাতায় আন্তর্জাতিক সংগীত মেলার আয়োজন করা হবে বলে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন প্রথমে তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র স্টলের উদ্বোধন করেন মমতা। এরপর মূল মঞ্চে যান। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিত সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন-সহ অনেকে। উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্মরণ করেন সম্প্রতি স্বর্ণযুগের হারিয়ে যাওয়া শিল্পীদের।
বইমেলা থেকেই যুদ্ধে যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, সারা বিশ্বে শান্তি স্থাপন হোক। ভারতই নেতৃত্ব দিক যুদ্ধ বন্ধের। বাংলা কোনও দেশের যুদ্ধকেই সমর্থন করে না। তবে, এই ইস্যুতে আবেগে ভেসে কোনও বিক্ষোভ না করার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
বইমেলার জন্য করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে বেশি বাস চালানোর জন্যে পরিবাহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রীর। এবার বইমেলায় নেতাজি ও ঋষি অরবিন্দর নামে হচ্ছে দু’টি হল রয়েছে। ২টি তোরণ রয়েছে সত্যজিৎ রায় ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে। এবার মোট ৬০০টি স্টল রয়েছে মেলায়। লিটল ম্যাগাজিনের জন্য দুশোটি স্টল রয়েছে। মেলায় ঢোকা ও বেরোনোর জন্য মোট ৯টি গেট। যার মধ্যে তিনটি তৈরি বঙ্গবন্ধুর লেখা বইয়ের আদলে। বঙ্গবন্ধুর নামে একটি গেটও আছে। রয়েছে একটি বিশ্ববাংলা গেটও।