দেবর্ষি মজুমদার, বীরভূম: কোলকাতা আদালতের নির্দেশের পরই শুক্রবার রাতে রামপুরহাট চলে আসে সিবিআই। রাতে তারা তারাপীঠের একটি বেসরকারি হোটেলে ওঠে। শনিবার সকালে সিবিআইয়ের দুই সদস্যের একটি রামপুরহাট (Rampurhat) আদালতে জি আরও-র কাছ থেকে নথি নিয়ে রামপুরহাট এ সি জে এম আদালতে সিটের কাছ থেকে নেওয়া এফ আই আরকে রেজিস্ট্রার করে এই মামলাটিতে তদন্তের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেয়। সিবিআই ডি আই জি অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে বারো সদস্যের একটি দল ও প্রায় দশের অধিক সি এফ এস এল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অবশ্য এগারোটা চল্লিশ নাগাদ বগটুই গ্রামে প্রথমে পৌঁছায় সি এফ এস এল টিম । তারা অপেক্ষা করতে থাকেন ডি আই জি অখিলেশ সিং সিবিআই ক্রাইম ব্রাঞ্চের জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যে অকুতোস্থলে তিনি পৌঁছনোর শুরু হয় তদন্ত। অন্যদিকে সিবিআইয়ের একটি টিম রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথে কথা বলে এবং সেখানও নথি দেখে।
আরও পড়ুন – West Bengal Government: অসামরিক বিমান পরিবহণে সাফল্য, আবার কেন্দ্রের পুরস্কার বাংলাকে
বগটুই গ্রামে সিবিআই টিম প্রধান পিও সোনা সেখ, বাণী সেখ, মিহিলাল সেখের বাড়ি যায়। প্রথমেই সোনা সেখের বাড়িতে ঢুকে যেখানে পোড়া লাশগুলো পাওয়া যায় সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। গ্যাসকাটার দিয়ে লোহার যে গেটগুলো ভাঙা হয় সেগুলো থেকে নমুনা নেওয়ার পাশাপাশি ছবি তোলে এবং সমস্ত তদন্তের ভিডিও গ্রাফী করে। দেওয়াল ও মেঝেতে কোনো তরল ঢেলে পোড়ানো হয় কিনা তা খতিয়ে দেখে। ঘরের ভেতর ছাড়াও সোনা সেখের বাড়ির ছাদেও ওঠে। আরেকটি টিম সমস্ত পিও-র এলাকার স্কেচ ম্যাপ, ফিতে দিয়ে এলাকা মাপজোক শুরু করে। এছাড়াও টেক্সাস সলুউশন প্রাইভেট লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অমিত জোশীর নেতৃত্বে থ্রিডি স্ক্যানার ম্যাপিং শুরু করে। তারপর ডি আইজির নেতৃত্বে এই টিম ফটিক সেখের বাড়িতে পৌঁছায়। সেখান থেকে সোজা চলে যায় সেখ লালের বাড়ি। তাঁর স্ত্রী নাজিমা বিবির দেহ আগুনে ষাট শতাংশ পুড়ে যায়। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পিওতে কাটিয়ে বেলা দুটো নাগাদ সিবিআই টিম হাজির হয় রামপুরহাট থানায়। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বীরভূম পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী, ডি আইজি বর্ধমান রেঞ্জ ভরতলাল মিণা। ছত্রিশ মিনিট পর থানা থেকে বের হন এসপি নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী, তারপর দুটো তেপান্ন মিনিটে থানা থেকে বেরিয়ে যান ডি আই জি ভরতলাল মিণা। জানা গেছে, এদিন সিটের পুলিশের কাছ থেকে সিজার লিস্ট, তদন্তের নথি, দমকল আধিকারিকের কাছ থেকে সমস্ত নথি নেয় সিবিআই।
পাশাপাশি, এস পি, ডি আইজি সকলের সাথে বৈঠক করেন সিবিআই ডি আই জি অখিলেশ সিং। জানা গেছে, এদিন রামপুরহাট (Rampurhat) থানায় আনা হয় অভিযুক্ত আনারুল হোসেনকে। সিবিআই আধিকারিক কোনো অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কিনা বলতে চান নি। তবে বেসরকারি সূত্রে জানা গেছে, সিবিআই তার সাথেও কথা বলে। সব শেষে বেরিয়ে আসার সময় ডি আই জি অখিলেশ সিং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে। সিবিআইয়ের একটি টিম সাঁইথিয়ার গোপালজল গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া বগটুই গ্রামের বাসিন্দা মিহিলাল সেখের সাথে দেখা করার কথা। সূত্রের খবর, দখলবাটি গ্রামে থাকা মিহিলাল সেখের মেয়ে মাফুজা বিবিকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রামপুরহাট থানায় আসায়, দখলবাটি গ্রামেও পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।