১লা বৈশাখের সেরা উপহার আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে পেলাম। মঞ্চে দাঁড়িয়ে ও আমাকে ডায়মন্ড হারবার ক্লাবের জার্সি পরিয়ে দিল। অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলল, তুমি ভারতের ক্যাপ্টেন ছিলে। এটা তোমারই পরা উচিত। এত গর্ব হচ্ছিল তখন। রাজনীতিবিদ হলেও আমার আসল পরিচয় ফুটবলার। অভিষেক (Abhishek Banerjee) আমার ছোট ভাইয়ের মতো। ওকে সংসদে বক্তব্য রাখতে দেখে বুকটা ভরে উঠে। এই বয়সে এত পরিণত হয় কী করে। এখন দেখছি রাজনীতির মতোই ফুটবলের আঙিনাতেও ও তুখোড়। আমায় বলল, দাদা তোমাকে মোহনবাগান থেকে তুলে আনব। আমার ক্লাবে তোমার মতো লোককে চাই।
কথা দিয়েছি। মোহনবাগানের সঙ্গে আমার ৫০ বছরের সম্পর্ক। কিন্তু অভিষেক বললে আমি সব সময় আছি। ও দারুণ সব কথা বলল সবার সামনে দাঁড়িয়ে। বলল, রাজনীতি অন্য জায়গায়। এখানে শুধুই খেলা। আসুন আমরা দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে বাংলার ফুটবলের পাশে দাঁড়াই। মন ছুঁয়ে গেল। এমন করে কে আমাদের ফুটবলের জন্য ভাবে। আমি এখনই বলে দিতে পারি অভিষেকের নতুন ক্লাব ময়দানে সাড়া ফেলবে। আর ও তো বলেই দিল কয়েক বছরের মধ্যে এই ক্লাবকে আইএসএলে পৌঁছে দেবে।
আরও পড়ুন – ফিরে এল বারপুজো, যাত্রা শুরু অভিষেকের ক্লাবের
সংসদে ব্যস্ত থাকি বলে ৮-৯ বছর ধরে বারপুজোয় থাকতে পারি না। তার মধ্যে আবার গত দু’বছর কোভিড ছিল। খুব চিন্তা হত তাহলে খেলা কি বন্ধ হয়ে যাবে। ফুটবল শেষ হয়ে গেলে এই ছেলেরা কোথায় যাবে। ডায়মন্ড হারবার ক্লাবের অনুষ্ঠানে আসার আগে শুক্রবার সকালে চলে গিয়েছিলাম মোহনবাগানে। বলতে পারেন বিনা নিমন্ত্রণেই। কিন্তু নিজের ক্লাবে আবার নিমন্ত্রণ কিসের। সবাই আমাকে দেখে হইহই করে উঠল। খুব ভাল লাগছিল চেনা ছবিটা দেখতে পেয়ে। আমাদের সময়েও এরকমই হত। রাশভারী ধীরেন দে নতুন পোশাক পরে সবাইকে কাছে টেনে নিতেন। সাতসকালে অন্তত হাজার ছয়েক লোক হয়েছিল মোহনবাগানে। ঠিক আগের মতো।
এই লেখা যখন লিখতে বসেছি, তখনও কানে বাজছে অভিষেকের কথাগুলো। এখানে পার্টি নয়, সবাই মিলে ফুটবল করব। দু-চার বছরে আইএসএল খেলবে আমাদের ক্লাব। আমার ধারণা ছিল না ফুটবল নিয়েও এত স্বচ্ছ ধারণা আছে আমাদের অভিষেকের। আমি খুব আশায় থাকছি ডায়মন্ড হারবার ক্লাবকে নিয়ে। এই ক্লাব আগামিদিনে অনেক দূর যাবে।