প্রতিবেদন : নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে আসানসোল লোকসভা ও বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের হাইভোল্টেজ ভোট পর্ব। এবার ফল ঘোষণার পালা। শনিবার ১৬ এপ্রিল জানা যাবে দুই কেন্দ্রের যুযুধান রাজনৈতিক প্রার্থীদের ভোট ভাগ্য। দু’দিন আগেই ভোট গণনার যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণের মতোই আসানসোল বালিগঞ্জ কেন্দ্রের (By Election) ভোট গণনা পর্বেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার বালিগঞ্জ এবং আসানসোল উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই এই দুই এলাকার প্রার্থীদের ভাগ্য বন্দি রয়েছে ইভিএমে আর সেই ইভিএম বন্দি আছে স্ট্রংরুমে। যে স্ট্রংরুমের পাহারায় আছে এক প্ল্যাটুন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তাঁরা মোট আটজন করে ডিউটি করছেন তিনটি শিফটে। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে এই স্ট্রংরুমকে। তিনটি স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে, পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে যার মাধ্যমে খোদ নির্বাচন কমিশনার থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের সব কর্তাই যেমন নজরদারি করছেন ঠিক তেমনই নজরদারি করছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচনী আধিকারিককে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে একবার করে সেখানে গিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হচ্ছে ও রাজ্য এবং কমিশনের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি যদি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট সেখানে যেতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তাহলে তাঁদেরও নানা নিয়ম ও বিধি-নিষেধ মেনে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
শনিবার বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের (By Election) গণনা হবে। তার আগেই গণনাকেন্দ্রের দুশো মিটার বাইরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এই গণনাকেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করতে গেলেও নির্বাচন কমিশনের নিয়মকে মানতেই হবে। না হলে কোনওমতেই গণনাকেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। গণনাকেন্দ্রের বাইরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। প্রথম বলয়ে একেবারেই গণনাকেন্দ্রের বাইরে সেখানে রাজ্য পুলিশের কমব্যাট ফোর্স, কমান্ডো বাহিনী সহ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। দ্বিতীয় বলয়ে রাজ্য সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দফতরের কর্মীরা থাকবেন, থাকবেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এবং রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় থাকবেন। এর পাশাপাশি যাঁরা ভিতরে প্রবেশ করবেন তাঁদের কাছে কেবলমাত্র সাদা কাগজ ও পেন ছাড়া কিছুই রাখা যাবে না। রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের গণনাকেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করতে হবে তিরিশ মিনিট আগে। যদিও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিন্তু তারপরেও কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, মুখে মাস্ক পরেই ভিতরে প্রবেশ করতে হবে, থাকবে স্যানিটাইজারও।
সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে অবজার্ভার ও রিটার্নিং অফিসার আটটার সময় স্ট্রংরুমে পৌঁছবেন এবং সকলের উপস্থিতিতে স্ট্রংরুম খোলা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে। এরপর মূল গণনাকেন্দ্রের পাশে একটা ঘর থাকবে যেখানে প্রথমে পোস্টাল ব্যালট গণনা করা হবে। একটা ঘরে সবক’টি টেবিলের গণনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাকে যোগ করা হবে, এরপর অবজার্ভার তাতে স্বাক্ষর করলেই বাইরে প্রথমে মাইকে ঘোষণা করা হবে, একসঙ্গেই কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এখনও পর্যন্ত কমিশন জানিয়েছে, বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের গণনা করা হবে মোট ১৬টি টেবিলে ১৯ রাউন্ডে। অন্যদিকে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭ বিধানসভা কেন্দ্রে ১৪ থেকে ১৮ রাউন্ড গণনা হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। কমিশন কর্তাদের আশা আসানসোল ও বালিগঞ্জের ভোটের ভবিষ্যৎ সর্বসমক্ষে চলে আসবে দুপুর গড়ানোর আগেই।