প্রতিবেদন : বাংলার ‘সন্তোষ তরী’ ডুবল তীরে এসে। স্বপ্নভঙ্গ প্রিয়ন্ত সিং, মনোতোষ চাকলাদারদের। ১২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর ফাইনালের ফয়সালা হল টাইব্রেকারে। সেখানে ৫-৪ গোলে বাংলাকে হারিয়ে ২৯ বছর পর ঘরের মাঠে সন্তোষ ট্রফি জিতল কেরল। আইএম বিজয়ন, জো পল আনচেরিদের সামনে কেরল ফুটবলে নতুন ইতিহাস লিখলেন জিজো জোশেফরা।
অথচ ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত। প্রতিশোধের আগুন বুকে নিয়ে, মাঠের বাইরের প্রতিপক্ষ সামলে, গ্যালারির শব্দব্রহ্ম থামিয়ে কেরলের মাটিতে বিজয়কেতন প্রায় উড়িয়েই ফেলেছিল বাংলা। কিন্তু নিজেদের ভুলে বিজয়নদের ডেরা থেকে রানার্স ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরছে রঞ্জন ভট্টাচার্যের দল।
আরও পড়ুন-উচ্চমাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে জীবনের দিক নির্দেশনা
ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট গোলশূন্য থাকার পর অতিরিক্ত সময়ের খেলা হয়। সেখানে ৯৭ মিনিটের মাথায় দুরন্ত হেডে কেরলের জালে বল জড়িয়ে ম্যাচে বাংলাকে এগিয়ে দেন দিলীপ ওরাওঁ। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে (১১৭ মিনিট) কেরলের হয়ে গোল শোধ করে খেলায় সমতা ফেরান বিবিন। ১-১ অবস্থায় ম্যাচের নিষ্পত্তি হয় টাইব্রেকারে। সেখানে বাংলার হয়ে পেনাল্টি মিস করেন সজল বাগ। তাঁর দ্বিতীয় শট বারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। চূর্ণ হয়ে যায় বাংলার সন্তোষ জয়ের স্বপ্ন। মালাপ্পুরম থেকে ফোনে কোচ রঞ্জনের গলায় আক্ষেপ, হতাশার সুর। ভেঙে পড়েছেন ফুটবলাররা। রঞ্জন বললেন, “এত গোল মিস করলে কীভাবে জিতব! সন্তোষ ট্রফি আমাদের কপালে ছিল না, তা নাহলে এই ম্যাচ আমরা হেরে যাই! ১-১ হওয়ার পর দিলীপ ওই পুশটা করতে পারল না। আমরা তো ওদের পায়ে বল জমা করলাম। আমরা তো প্রথমার্ধে দু-তিন গোলে এগিয়ে যাই। ছেলেদের সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই।”
আরও পড়ুন-বেদ পড়ানোর ফতোয়া, কচিকাঁচাদের জন্য জরুরি!
কেরলকে চাপে রাখতে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবলকে অস্ত্র করেছিল বাংলা। ফারদিন আলি মোল্লা, মহীতোষ রায়, দিলীপ ওরাওঁকে আপফ্রন্টে রেখে দল সাজিয়েছিলেন বাংলার কোচ। মাঝমাঠে বড় চেহারার নবি হোসেন খানকে নামিয়ে চমক দিয়েছিলেন রঞ্জন। কেরল ডিফেন্সকে চাপে রেখে গোলমুখ খোলার চেষ্টায় থাকে বাংলা। কিন্তু একের পর এক গোলের সুযোগ নষ্ট করে হতাশা বাড়ান ফারদিন, মহীতোষরা। দ্বিতীয়ার্ধে দলে বদল এনে বাংলা গোল পেতে মরিয়া হওয়ার চেষ্টা করলেও নতুন উদ্যমে ম্যাচে জাঁকিয়ে বসে কেরল। আক্রমণে ঝাঁজ বাড়িয়ে বাংলার রক্ষণকে ব্যস্ত রাখে বিনু জর্জের দল। গোলের সুযোগও তৈরি করে তারা। ৫৮ মিনিটে একা গোলকিপার প্রিয়ন্তকে পেয়েও বল পোস্টের বাইরে মারেন জিজো জোশেফ। দ্বিতীয়ার্ধে কেরলের আধিপত্য থাকলেও অধিনায়ক মনোতোষের নেতৃত্বে বাংলার রক্ষণ লড়াই চালিয়ে যায়। খেলার শেষ লগ্নে কেরল আক্রমণে বাংলার রক্ষণ ভেঙে চুরমার হলেও তারা গোলের সুযোগ নষ্ট করে। এর পর নাটকীয়তায় ভরা অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ ১-১ হওয়ার পর ম্যাচের ফয়সালা হল টাইব্রেকারে।