মুম্বই, ৯ মে : সুড়ঙ্গের শেষে আলোর দেখা মিলবে কি না কেউ জানে না। নাইটরা (KKR) তবু ছুটছে! এক ধাপ ….এক ধাপ … সোমবার এক অভাবনীয় কাণ্ড ঘটে গেল নভি মুম্বইয়ে। এক আইপিএলে দু’বার কেকেআর হারাল মুম্বইকে। শাহরুখ খান নিশ্চয়ই খুশি হলেন। এটা তাঁর প্রেস্টিজ ম্যাচ। কিন্তু ৫২ রানে জিতেও নাইটরা সেই আলেয়ার পিছনেই পড়ে থাকল। ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। বড়জোর ১৪ হতে পারে। তাতে প্লে-অফের দরজা খুলবে কি না এখনও কেউ জানে না।
রোহিতের দুঃস্বপ্নের আইপিএল আরও লম্বা হল। এদিন সাউদিকে উইকেট দিয়ে গেলেন প্রথম ওভারেই। করলেন ২। হিটম্যানের এই ছন্নছাড়া ফর্ম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ঈশান কিসান ছাড়া কাউকে দেখে মনে হল না কেকেআরের ১৬৫-কে তাড়া করার ইচ্ছা আছে। কামিন্স মাঝখানে এসে এক ওভারে তিন উইকেট নিয়ে মুম্বই ব্যাটিংকে ঝাঁকিয়ে দিলেন। নাইটদের (KKR) ইনিংসে যেটা বুমরা করেছেন। শেষপর্যন্ত ১৫ বল বাকি থাকতেই মুম্বইয়ের ইনিংস শেষ হয়ে গেল ১১৩ রানে। নাইটরা জিতে উঠে এল সাতে।
কেকেআর দল নিয়ে পরীক্ষা চালাবে। এটা এখন গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একসঙ্গে দলে পাঁচটা পরিবর্তন হলে ‘লোক তো নোটিশ করেঙ্গেই’! সোমবার সেটাই হল। বাবা ইন্দ্রজিৎ, শিবম মাভি, অনুকূল রায়, হরষিত রানা, অ্যারন ফিঞ্চরা বসলেন। এলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার, শেলডন জ্যাকসন, প্যাট কামিন্স, বরুণ চক্রবর্তী ও অজিঙ্ক রাহানে।
এরকম মরণ-বাঁচন ম্যাচে কামিন্স আর বরুণের মতো ম্যাচ উইনারকে নিয়ে ডি ওয়াই পাটিলে নামায় কোনও ভুল নেই। তিন উইকেট নিয়ে কামিন্স সেটা দেখালেন। কিন্তু ফিঞ্চের মতো বিগ ম্যাচ প্লেয়ারকে বসিয়ে রাহানেকে ফেরানোর কী ব্যাখ্যা কেউ জানে না। ২৪ বলে ২৫ রান করে গেলেন রাহানে। কিন্তু সেট হয়ে কার্তিকেয়াকে যেভাবে রিভার্স সুইপে উইকেট দিয়ে এলেন, সেটা স্কুল ক্রিকেটে চলে। ম্যাচের ফাঁকে ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে কমেন্টেটররা তাঁদের রোজকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে নাগাড়ে প্রশ্ন করে গেলেন। আর নাইট কোচ আমতা আমতা করে চোট-টোটের ব্যাখ্যা শুনিয়ে দিলেন। কিন্তু চোট বলতে তো শুধু উমেশের নামই শোনা যাচ্ছিল! তিনি এদিনও খেলেননি।
আরও পড়ুন: জয় নিশ্চিত হুঙ্কার পুতিনের
ফিঞ্চ অস্ট্রেলিয়ার সাদা বলের অধিনায়ক। ফর্ম হারিয়ে ফেলার অভ্যাস আছে। ওয়ার্নের কাছের বন্ধু বলে পরিচিতি ছিল। ফর্ম হারিয়ে বারবার তিনি ওয়ার্নের কাছে যেতেন আর ভয়ঙ্কর ফর্ম নিয়ে ফিরে আসতেন। পাকিস্তান সফরের আগেও এভাবে ফর্ম হারিয়েছিলেন ফিঞ্চ। তবু নির্বাচকরা তাঁর উপর ভরসা রেখেছিল। তিনি রান নিয়ে ফেরত এসেছিলেন। কেকেআর (KKR) সেটা পারেনি। কে জানে, খেললে হয়তো এই ম্যাচেই রান নিয়ে ফিরতেন বিদেশি ওপেনার। তাহলে টি-২০ ক্রিকেটে জীবনের সেরা বোলিংয়ের সুযোগ নাও পেতে পারতেন বুমরা। এদিন ১০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে গেলেন বুম বুম বুমরা।
রোহিত টসে জিতে নাইটদের আগে ব্যাট করতে দেন। আর ভেঙ্কটেশ কিন্তু ভালই শুরু করেছিলেন। কিন্তু ৬০ রানের মাথায় তিনি ফিরে গেলেন ৪৩ রানে। এরপর রাহানে। প্রথম দুটি উইকেট কার্তিকেয়ার। শ্রেয়সকে (৬) ফিরিয়ে দেন মুরুগান অশ্বিন। রাসেলকে (৯) বুমরা। নাইট দুর্গের পতনের এটাই শুরু। বুমরার হাতে শেষ ক’টা উইকেট গেল খুব তাড়াতাড়ি। কেকেআর এরপরও ১৬৫/৯-তে গেল নীতীশ রানার জন্য। তিনি ২৬ বলে ৪৩ রান করে গেলেন। শেষদিকে রিঙ্কু সিং ১৯ বলে ২৩ নট আউট থাকলেন। কিন্তু শেষ ওভারে বুমরার বলে ১ রানের বেশি তুলতে পারেননি তিনি। নাইটদের সহজ জয়ে এসব নিয়ে ভাবার অবশ্য আর দরকারই পড়েনি।