সংবাদদাতা, কাটোয়া : কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে (Katwa Hospital) ঠিকাদারদের পেশ করা বিল যাচাই করতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় কর্তৃপক্ষের। কোটি টাকার ভুয়ো বিল দাখিল করে টাকা লুট করেছেন ঠিকাদাররা। এর মধ্যে রয়েছে ওষুধের দোকান থেকে আসবাবপত্র কেনা, ২৫ দিনে ৩ লক্ষ টাকার বিরিয়ানি বা ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকার চারাগাছ কেনার বিল। একই দিনে একই সময়ে একই গাড়ি দু’জায়গায় কাজ করার বিলও আছে। এমনতর গরমিল লক্ষ্য করে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকা হয় রোগীকল্যাণ সমিতির। বৈঠকে ঠিক হয়, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হবে। ঘটনা জানার পর হাসপাতালে (Katwa Hospital) আসেন পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি জানান, ‘বিলে গরমিলের সত্যতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হাসপাতালের যে কর্তা বা কর্মী বিলে স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট পাঠানো হবে। রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেবে তারা।’ রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য, কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যাচাই কমিটি রিপোর্ট পেশ করেছে। তাতে ভুয়ো বিল পেশ করে কোটি টাকার উপর তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে। হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ হাসপাতালের সুপার সৌভিক আলমও জানান, ‘প্রশাসনিক তদন্ত হবে। দোষ প্রমাণ হলে শাস্তি হবে।’ অভিযুক্ত ঠিকাদারদের একজন কিংশুক ঘোষ বিষয়টি ‘আইনি ব্যাপার’ বলে এড়িয়ে যান। উল্লেখ্য, ২৮০ শয্যার কাটোয়া হাসপাতাল থেকে শুধু কাটোয়া মহকুমাই নয়, লাগোয়া বীরভূম, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার একটি অংশের মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পান। ফলে হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোর বিভাগে রোগীর চাপ সাঙ্ঘাতিক। খাবার, গাড়ি ভাড়া, ওষুধ, আসবাব, বৈদুতিন সরঞ্জাম-সহ দরকারি জিনিসপত্র দরপত্র হেঁকে ঠিকাদারদের মাধ্যমে কেনা হয়। সমস্যা দেখা দেয় ২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষের বিল মেটানোর সময়। কিছু বিলে দরপত্রের সঙ্গে গরমিল লক্ষ্য করে সেগুলি আটকে পরীক্ষা করতে তৈরি হয় যাচাই কমিটি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘের ডেরায় এবার কুমিরের হানা