দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। অবশেষে হেরিটেজ তকমা পেল পশ্চিম মেদিনীপুরের রানি শিরোমণি গড়(Rani Shiromoni)। মঙ্গলবার প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত হয়ে রানির গড় কর্ণগড়কে(Karnagar) হেরিটেজ ঘোষণা করার পাশাপাশি কর্ণগড় ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলকে ঢেলে সাজানোর কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন তিনি আধিকারিকদের ট্যুরিজমের লক্ষ্যে কর্ণগড় ও পার্শ্ববর্তী গনগনিকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেন। রানি শিরোমণির মন্দিরের ২ জন পুজারিকে পেনশন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-থমাস কাপ জয়ের জের চ্যালেঞ্জার্স আয়োজন, কোচ নিয়োগে জোর
এদিন প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দেন ‘কর্ণগড় হেরিটেজ’। পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান ট্যুরিজমের লক্ষ্যে শিরোমণি গড়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? মুখ্যমন্ত্রীকে জবাবে আধিকারিকরা জানান, ইতিমধ্যেই হেরিটেজ নোটিশ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে মূল ফোর্টে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলে তৈরি হয়েছে ইকো ট্যুরিজম পার্ক। একটি রিসর্টও তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার মধ্যে। এছাড়াও গাইড ট্রেনিং-য়ের জন্য ৩০০ জনের বেশি আবেদন করেছিলেন তাদের মধ্যে ৪০ জনেরও বেশি জনকে গাইড ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। সব কিছু বিস্তারিত শোনার পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই এলাকায় পর্যটকদের থাকার জন্য যাতে হোম-স্টে তৈরি করা যায় তার ব্যবস্থা করা হোক। স্থানীয় ২০-২৫ জন মানুষ ডেকে তাদেরকে বোঝান হোম-স্টে করলে সরকারি সুবিধা কী কী মিলবে। তারা নিশ্চই রাজি হবেন। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রানি শিরোমণির মন্দিরে একজন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা পুজো করেন। তাঁদের জন্য সরকারি পেনশনের সুবিধার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া গনগনিতেও ট্যুরিজমে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ওখানেও ‘হোম-স্টে’র ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন তিনি। আগামী জুন মাসেই গনগনির সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন আধিকারিকরা ।
আরও পড়ুন-বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে ভারতের আধিপত্য চান গোপীচাঁদ
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনে দেশের প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী রানি শিরোমণি। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত কর্ণগড় হেরিটেজ তকমা ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের স্বীকৃতি পাক এই দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। বিগত তিন বছরে আন্দোলন তৈরি হয়েছিল ভালোবাসি কর্ণগড়, হেরিটেজ জার্নি, রানী শিরোমণি ঐক্য মঞ্চ সংগঠনের তরফে। তাদের তরফে শুরু হয়েছিল জনসমর্থন সংগ্রহের কাজ। সমাজমাধ্যমে প্রচারের পাশাপাশি হয়েছে ক্রমাগত ইতিহাস ভিত্তিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব নিয়ে লেখালেখি, দুটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ও একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ, সমস্ত দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন চলেছে সমান তালে। দাবির স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী আগেই করেছিলেন। এবার জেলা সফরে মেদিনীপুর এসে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মঙ্গলবার ঘোষিত মান্যতা দিলেন তিনি।