প্রতিবেদন : কুতুব মিনার বিতর্কে জোড়া ধাক্কা খেল কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। একদিকে আদালত জানিয়ে দিল, মিনার চত্বরে কোনও পুজোপাঠ করা যাবে না। অন্যদিকে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ স্পষ্ট ভাষায় বলে দিল, সংরক্ষিত মনুমেন্টের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে কুতুব মিনারকে। তাই কোনও অবস্থাতেই এই স্মারককে মন্দিরে বদলে দেওয়া যাবে না। জ্ঞানবাপীর বিতর্কের মধ্যেই কুতুব মিনারকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের নাটক।
আরও পড়ুন-মানুষ খুনে ভেড়ার জেল তিন বছর!
এএসআইয়ের প্রাক্তন আঞ্চলিক অধিকর্তা ধরমবীর শর্মার দাবি, কুতুব মিনার কুতুবউদ্দিন আইবকের বানানো নয়। সূর্যের গতিপথ নির্ণয় করতে বানিয়েছিলেন হিন্দু সম্রাট রাজা বিক্রমাদিত্য। এর আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বনশলের দাবি ছিল, কুতুব মিনারের কাঠামোটি আসলে বিষ্ণু স্তম্ভ এবং মিনার চত্বরের মসজিদটি তৈরি হয়েছিল ২৭টি হিন্দু-জৈন মন্দির ধ্বংস করে পাওয়া জিনিসপত্র দিয়ে। ফলে মন্দির ফিরিয়ে আনা হোক, এই দাবিতে মামলা চলছে দিল্লির সাকেত আদালতে। কুতুব মিনার চত্বরে দেবদেবীদের পুজো করতে দেওয়া হোক, আবেদন ছিল এমনও। এদিন মামলার শুনানিতে বিচারক সাফ জানিয়ে দিলেন, কোনও পুজো ছাড়াই যদি ৮০০ বছর দেবতারা টিকে থাকতে পারেন, তবে আগামীতেও পারবেন। ফলে স্থিতাবস্থাই বজায় থাক।
আরও পড়ুন-অসমের বন্যায়
হিন্দুপক্ষের আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈনের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট পুরনো রায়ে বলেছিল, যদি কোথাও দেবতা থাকেন, তবে পুজো করার অধিকারও থাকে। তাই এক্ষেত্রে পুজো করার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পাল্টা জবাবে বিচারক বলেন, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুজোপাঠের অধিকার খর্ব করা যেতেই পারে। এর মধ্যেই এএসআই হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানায়, কুতুব মিনারকে মন্দিরে রূপান্তর করা অসম্ভব। ফলে, কুতুব-কট্টরবাদীদের হাতে এদিন পেন্সিল ছাড়া আর বিশেষ কিছুই পড়ে রইল না।