সংবাদদাতা, খড়্গপুর : বাবা, মা, স্ত্রী কেউ চাননি। তবু লাদাখের দুর্গম সিয়াচেনে সদ্য পোস্টিং নিয়ে যান জওয়ান বাপ্পাদিত্য খুটিয়া। বাবা প্রাক্তন সেনা সুকুমার খুটিয়া অনেক বুঝিয়েছিলেন যাতে ছেলে পোস্টিং বাতিলের আবেদন করে। কিন্তু বাবাকে আশ্বস্ত করে বাপ্পাদিত্য বলেছিলেন, ‘ভয় পেয়ো না। একবার গিয়েই দেখি না, তারপর না হয় ভাবা যাবে!’ শেষ পর্যন্ত আর ভাবার সুযোগ কিংবা ভয়কে জয় করা হয়ে উঠল না। সিয়াচেন যাওয়ার পথে আচমকা ধস নামায় নুব্রায় ৮০ থেকে ৯০ ফুট গভীর শিয়ক নদীর খাদে পড়ে যায় তাঁদের সেনা বাসটি। মর্মান্তিক মৃত্যু হয় খড়গপুরের সেনা জওয়ান বাপ্পাদিত্য-সহ আরও ৭ জওয়ানের। জখম হন ১৯ জন।
আরও পড়ুন-শিলিগুড়ি সিপিএমে বিদ্রোহ
বাপ্পাদিত্যর বাড়ি খড়্গপুরের বারোভেটিয়ায়। ২০০৯-এ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। সদ্য বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে ২৭ এপ্রিল ফের কাজে যোগ দেন। তার পরই গুজরাট থেকে সিয়াচেনে বদলি করা হয় তাঁকে। তখনই আপত্তি জানান বাড়ির সকলে। বাড়িতে রয়েছেন মা-বাবা, স্ত্রী ও ১১ মাসের শিশুকন্যা। শুক্রবার গভীররাতে মৃত্যুসংবাদ পৌঁছনোর পর থেকেই থেকেই গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া। দুঃসংবাদ শোনার পর থেকেই বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন বাপ্পার স্ত্রী। মা কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘ডিসেম্বরে বাড়ি আসবে বলে গেল ছেলে। আর কোনও দিনই সে ফিরবে না।’
আরও পড়ুন-ভাঙা হবে বেআইনি হোর্ডিং
দুর্ঘটনার খবর জেনে শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ট্যুইটারে লেখেন, ‘লাদাখে আমাদের ৭ জন সাহসী সেনার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই মৃত্যুতে গভীরভাবে মর্মাহত। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। শোকাহতদের জন্য আন্তরিক সমবেদনা রইল।’ শোকপ্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।