একের পর এক খুন উপত্যকায়। জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সময় মোদি সরকার জানিয়েছিল, এই বিশেষ মর্যাদা তুলে নিলে জম্মু কাশ্মীরের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হবে। কিন্তু সরকারের সে দাবি যে একেবারেই ফাঁকা আওয়াজ তা বিগত কয়েক দিনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে জঙ্গিদের গুলিতে উপত্যকার মাটিতে রক্ত ঝরেছে ৮ জনের। যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা প্রত্যেকেই হয় কাশ্মীরি পণ্ডিত অথবা হিন্দু সম্প্রদায়। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে আতঙ্কে কাশ্মীর ছাড়ছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা (Kashmiri Pandit)।
বৃহস্পতিবার সন্ধেয়, সন্ত্রাসীরা বদগামে দুই পরিযায়ী শ্রমিককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। যার মধ্যে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত শ্রমিক বিহারের বাসিন্দা এবং হামলায় আহত দ্বিতীয় শ্রমিক পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরের বাসিন্দা। এই দুই শ্রমিকই বদগাম জেলার চাদুরা গ্রামে একটি ইটের ভাটায় কাজ করতেন। পুলিশ জানায়, কাজ করার সময় সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: উত্তরপত্রে আপত্তিকর লেখা কঠোর পদক্ষেপ করবে পর্ষদ
ঘটনার পরপরই, দুই শ্রমিককে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে বিহারের দিলখুশ কুমারকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং অন্য শ্রমিকের চিকিৎসা চলছে। এরপাশাপাশি শুক্রবার সকালে কুলগামে খুন হন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বিজয় কুমার। বিজয় কুমার রাজস্থানের বাসিন্দা হলেও গত ৩ বছর ধরে কাশ্মীরে কর্মরত ছিলেন। শনিবার সকালেও জালালপুরের আপারা সেক্টরে ২ হিন্দু বাসিন্দাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। দুজনেই গুরুতর আহত। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার গভীর রাতে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মচারী জম্মু পৌঁছান। কাশ্মীরি পণ্ডিত (Kashmiri Pandit) ও কর্মচারীরা সরকারের কাছে সুরক্ষা দাবী করেন। পাশাপাশি গত কয়েকদিন ধরেই আতঙ্কে কাশ্মীর ছাড়ছেন বহু অমুসলিম বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, উপত্যকায় টার্গেট কিলিং-এর ঘটনা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পর, কাশ্মীরি পন্ডিতদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত খীর ভবানী যাত্রা আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৮ জুন থেকে খীর ভবানী যাত্রার প্রস্তুতি শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর জন্য তোরজোড়ও চলছিল দ্রুত। মন্দির পরিষ্কারও করা হয়, কিন্তু মন্দির চত্বরে কর্মচারীদের খুনের প্রতিবাদে অবিরাম বিক্ষোভ চলতে থাকে। এদিকে ৩০ জুন শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। এমন পরিস্থিতিতে ভক্তদের নিরাপত্তাই প্রশাসনের সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।