সঞ্জিত গোস্বামী, পুরুলিয়া: বিভূতিভূষণের অমর উপন্যাস ‘আরণ্যক’-এর রহস্যময় প্রকৃতিপ্রেমী যুগল প্রসাদকে মনে আছে? লবটুলিয়ার জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে গাছ পুঁতত, তাকে যত্নে লালন করত। সেই যুগল প্রসাদরা বাস্তবেও রয়েছেন। যেমন, বাঘমুণ্ডি থানার সিন্দরি গ্রামের দুখু মাঝি। নিজের লাগানো চারাগাছগুলিকে গবাদি পশু ও মানুষের হাত থেকে রক্ষা করতে অভিনব উপায় বার করেছেন তিনি। তাঁর সেই সুরক্ষা পদ্ধতিতে দিব্যি বড় হচ্ছে প্রচুর গাছ। তাই এবার পরিবেশ দিবস উপলক্ষে তাঁকে একটি সাইকেল উপহার দিল বাঘমুণ্ডি থানার সিন্দরি এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ অযোধ্যা হিলস। দুখু মাঝি প্রায় পঁচিশ বছর ধরে পথের ধারে, বনের মধ্যে গাছ লাগিয়ে চলেছেন। এর আগে বন দফতরও তাঁকে পুরস্কৃত করেছে।
আরও পড়ুন-একাধিক প্রাচীন গাছের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা
অরণ্যপ্রাণ দুখু জানিয়েছেন, বর্ষার আগে নানাধরনের গাছের বীজ সংগ্রহ করে নিরাপদ জায়গায় রেখে দেন। বীজ থেকে চারা হলে তা কোথাও রোপণ করেন। আগে চারাগুলো রক্ষার জন্য বেড়া দিয়ে ঝোপঝাড়, লতাগুল্ম ব্যবহার করতেন। কিন্তু মানুষ বেড়া ভেঙে নিয়ে যেত জ্বালানির প্রয়োজনে। তখন তিনি ঠিক করেন, শ্মশানের কাঠ, মৃতের পোশাক দিয়ে বেড়া করলে কেউ ছোঁবে না। গাছগুলি বেঁচে যাবে। কয়েক বছর সেই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে বহু চারা বাঁচিয়ে বড় করছেন। তাঁর এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো বললেন, অরণ্যমানব হিসাবে তিনি পাহাড়ের সকলের শ্রদ্ধেয়।