প্রতিবেদন : একটা সময় লোকে কলম বা পেন বলতে ফাউন্টেন পেনকেই বোঝাত। বাংলায় বলা হত ঝর্না কলম। তখন যেমন বেলজিয়ামের কাচ, অ্যাংলো সুইস ঘড়ি, গুনডিকের টেপরেকর্ডার, রোলাইফ্লেক্স ক্যামেরা, মরিস গাড়ি ইত্যাদি আসত, আসত পার্কার, শেফার্স, ওয়াটারম্যান ইত্যাদি কলমও। একটু উচ্চমধ্যবিত্ত শিক্ষিতদের কাছেও থাকত সোনার নিবের পার্কার বা অন্য পেন। একটু কম দামের মধ্যে বাজার ছেয়ে গিয়েছিল উইংসাং-এ। সরু নিব বলে অনেকের পছন্দ ছিল। সত্তর দশকের শেষ দিক থেকে ক্রমশ বাজার দখল করতে থাকে বলপয়েন্ট পেন, যাকে ডটপেন বলে চিনি। কালি ভরার ঝামেলা নেই, জল লাগলে ধেবড়ে যায় না। ফলে অচিরেই ফাউন্টেন পেনকে কোণঠাসা করে ফেলে। ঘটনাক্রমে আবার ফাউন্টেন পেনের চল বাড়ছে। নবীন প্রজন্ম খুঁজে পেতে বের করছে বাবা-জেঠার পার্কার, শেফার্স। কিন্তু তা লেখার মতো জায়গায় নেই। চিন্তা নেই, সোজা অসুস্থ কলম নিয়ে চলে যান পেন হাসপাতালে (Pen Hospital)। ধর্মতলার মোড়ে, এস এন ব্যানার্জি রোডের মুখে মেট্রো স্টেশনের পিছনে। সরকারি ঠিকানা, ৯ নং জওহরলাল নেহরু রোড। হাসপাতালের বড় সার্জেনের নাম মহম্মদ রিয়াজ। দেশি-বিদেশি যে কোনও পেনই অনায়াস দক্ষতায় সারিয়ে ফেলেন। নানা যন্ত্রপাতি আছে, আছে বিভিন্ন পেনের যন্ত্রাংশ। প্রয়োজনে যন্ত্রাংশ বানিয়েও নেন। ১৯৪৫ সালে ঠাকুরদা শামসুদ্দিন সাহেব পত্তন করেন পেন হাসপাতালের (Pen Hospital)। তাঁর পুত্র মহম্মদ সুলতান। বাবার কাছ থেকে ব্যাটন এখন রিয়াজ ও ইমতিয়াজের হাতে। বহু বিখ্যাত সাহিত্যিক, অধ্যাপক, সাংবাদিক থেকে আমলা এখানে এসেছেন এবং আসেন পেন মেরামত করাতে। নানা দামের কলম এখানে বিক্রিও হয়।
আরও পড়ুন: উন্নত কর্মসংস্কৃতির লক্ষ্যে দৃঢ় পদক্ষেপ মহানাগরিকের