প্রতিবেদন : অগ্নিপথ প্রকল্পের ( Anti-Agnipath Protest) প্রতিবাদে ডাকা ভারত বন্ধে দেশের বেশকিছু রাজ্যে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ট্রেন চলাচলে। সোমবার জম্মু-কাশ্মীর থেকে তামিলনাড়ু দেশের সর্বত্রই বন্ধ সফল করতে পথে নামে দেশের তরুণ সম্প্রদায়। বিহার ছাড়াও দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, তামিলনাড়ুর মতো একাধিক কাজ্যে রেল ও সড়ক পথ অবরোধ করে বিরোধীরা। কয়েকটি জায়গা থেকে অগ্নিসংযোগের ঘটনার অভিযোগও মিলেছে। অশান্তি রুখতে বেশকিছু জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। যদিও তাতে বিক্ষোভ বন্ধ করা যায়নি। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করল ভারতীয় সেনা। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২২ জুলাই শুরু হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া। স্থলসেনাবাহিনীতে যাঁরা যোগ দিতে ইচ্ছুক, তাঁরা ২২ জুলাই থেকে আবেদন করতে পারবেন। রবিবারই ভারতীয় বায়ুসেনা ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয় প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও শারীরিক গঠনের কথা। স্থলসেনাতে ভর্তির হওয়ার ক্ষেত্রেও যোগ্যতামান একই থাকছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় বাহিনীর টেকনিক্যাল ও মেডিক্যালে ভর্তি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, অষ্টম এবং দশম শ্রেণি পাশ যুবকরাও আবেদন করতে পারবেন। বিজ্ঞপ্তিতে অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে চার বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সেনার তিন বাহিনীর প্রধানরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন বলে খবর।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ড সফরের আগে পান্ডিয়াদের ছুটি
অগ্নিপথ প্রকল্পের (Anti-Agnipath Protest) প্রতিবাদে ডাকা বন্ধ ও অবরোধের জেরে এদিন ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে দিল্লিতে। অবরোধের জেরে দিল্লি-গুরুগ্রাম এক্সপ্রেসওয়েতে দীর্ঘক্ষণ থমকে যায় যান চলাচল। এদিনের বন্ধে প্রায় ৫০০টি ট্রেন মাঝপথেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। রেলমন্ত্রক সূত্রের খবর, বন্ধের জেরে ১৮১টি মেল-এক্সপ্রেস, ৩৪৮টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। চারটি মেল-এক্সপ্রেস এবং ছয়টি যাত্রীবাহী ট্রেন আংশিক ভাবে বাতিল হয়েছে। তামিলনাড়ুতে বড় স্টেশনগুলিতে সোমবার প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। কারণ, গত কয়েকদিন বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাটফর্ম টিকিট কেটে স্টেশনে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। বন্ধ ঘোষণার পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্যগুলিকে সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিশে কিছু অখ্যাত ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকা এই বন্ধে যেভাবে গোটা দেশে প্রভাব পড়েছে তাতে আগামী দিনে অগ্নিপথ প্রকল্পকে ঘিরে বড় ধরনের আন্দোলনের আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। বাতিল হয়েছে কিছু পরীক্ষা। বিহারে দিনের বেলা ট্রেন চলাচল আগেই বন্ধ রেখেছে রেল মন্ত্রক। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ডের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে প্রতিবাদকারীদের ঠেকাতে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বশীল তৃণমূল সরকারের সক্রিয়তায় রাজ্যের অবস্থা শান্তিপূর্ণই ছিল। অন্যদিকে কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিসান মোর্চার তরফে রাকেশ টিকায়েত এদিন বলেছেন, অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে ২৪ জুন তাঁরা দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখাবেন।