প্রতিবেদন : অসমের বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশই আরও অবনতি হচ্ছে। খাবার, পানীয় জল, ওষুধ, শিশুদের দুধ, কোনও কিছুই মিলছে না। ত্রাণ নিয়ে রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ। চরম দুর্গতিতে পড়া মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা মহারাষ্ট্রের বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কদের আপ্যায়ন করতেই ব্যস্ত। শিবসেনাকে ভাঙিয়ে কীভাবে বিজেপি সরকার গড়া যায় সেই পরিকল্পনা করতেই মুখ্যমন্ত্রী সময় কাটাচ্ছেন। আর মানুষ পড়ে রয়েছে এক অবর্ণনীয় পরিস্থিতির মধ্যে।
আরও পড়ুন-তিস্তার গ্রেফতারিতে প্রতিহিংসা, বলছে সব মহল
অসম তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের শাসক দল বিজেপির কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে ট্যুইট করা হয়েছে, অসমে ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিস্ময় দেখুন। আমাদের ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অত্যন্ত অযোগ্য মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ধন্যবাদ। তাঁদের জন্যই মানুষ বন্যার জল খেতে বাধ্য হচ্ছেন। অসম সরকারের কাছ থেকে মানুষের এটাই প্রাপ্য?
প্রবল বন্যার কারণে অসমে এখনও পর্যন্ত ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ। প্রশাসনের আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। শিলচর, রঙ্গিয়া, করিমগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকায় এখনও বেশিরভাগ গ্রাম ও শহর জলের তলায়। বেশিরভাগ কাঁচাবাড়ি কার্যত জলে মিশে গিয়েছে। মিলছে না খাবার ও পানীয় জল। দিশাহারা মানুষ বাধ্য হয়ে নদী-নালার জল পান করছেন।
আরও পড়ুন-জুবেরের গ্রেফতারির নিন্দা ও মুক্তির দাবি গিল্ডের
সিমি দেব নামে বাসদেবপুর শহরের এক গৃহবধূ অভিযোগ করেছেন, বন্যার কারণে তাঁর মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পানীয় জল মিলছে না। তাই বন্যার জল খাইয়েই মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়েছে। তাঁদের কাছে খাবার নেই বললেই চলে। সরকারের তরফেও কোনও সাহায্য মিলছে না। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা উদ্ধারকারীদের টিকিও দেখা যাচ্ছে না। তাই তাঁরা বাড়ি থেকেও বের হতে পারছেন না। মহম্মদ ইসমাইল নামে করিমগঞ্জের এক বাসিন্দা বলেছেন তাঁদের গৃহস্থালির সবকিছুই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বন্যা। প্রচণ্ড খিদের জ্বালায় ছটফট করছে বাড়ির সকলেই। বিস্কুট ছাড়া তাঁদের কাছে খাবার মতো কিছুই নেই। সরকার বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, কারও কোনও সাহায্য মেলেনি।
আরও পড়ুন-জি-৭ এর বিবৃতি আর মোদি সরকারের কাজে স্পষ্ট দ্বিচারিতা
বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রে পিছনের দরজা দিয়ে সরকার গড়ার পরিকল্পনা করতেই ব্যস্ত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তাই বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো সময় তাঁর হাতে নেই। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে রাজ্যবাসী সম্পর্কে উদাসীন সেখানে তার প্রশাসন আর কী কাজ করবে।