আগরতলা : যেদিন ত্রিপুরার সব জেলায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন হল এবং খোদ আগরতলা শহর তৃণমূলের মিছিলে জনজোয়ার দেখল, সেদিনই আবার রক্তাক্ত হামলা করল বিজেপির গুন্ডারা। শনিবার দুপুরে বাঁধারঘাট এলাকায় মুজিবর রহমানের বাড়ির প্রাঙ্গণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ দেখা এবং তৃণমূলে যোগদানের একটি অনুষ্ঠান ঠিক ছিল। তার আগেই দুপুরে আচমকা হামলা করে বিজেপির সশস্ত্র তিরিশ-চল্লিশজন গুন্ডা। তছনছ করে দেয় তারা। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে এমন আক্রমণ অভাবনীয়। শুভঙ্কর দেবনাথের মাথা ও ঘাড়ে রড দিয়ে মারা হয়। অচেতন হয়ে যান রক্তাক্ত শুভঙ্কর। মুজিবরের ডান হাত ভেঙে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষা করতে মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে বসুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রনি মিয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারা হয়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান ডাঃ শান্তনু সেন, কুণাল ঘোষ, মামুন খান। ছুটে আসে পুলিশ। গুরুতর জখম শুভঙ্কর ও মুজিবরকে অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে পাঠানো হয়। হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় বসে পড়েন শান্তনু। পুলিশের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কুণাল। কিন্তু যেহেতু জাতীয় সড়ক আটকালে মানুষের অসুবিধা, তাই তাঁরা অবরোধ করেননি। ওই বাড়িতে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে তাঁরা হাসপাতালে যান। শুভঙ্করের মাথায় বারোটি সেলাই। সিটি স্ক্যান, এক্সরে হয়। মুজিবেরও হাত ভেঙেছে। শান্তনু, কুণাল, মামুন সারাক্ষণ ছিলেন। খবর ছড়াতেই এসে পড়েন সুবল ভৌমিক-সহ ত্রিপুরার নেতৃবৃন্দ। সুবলবাবু পুলিশে অভিযোগ দায়েরের ব্যবস্থা করেন। মাথায় যেহেতু গুরুতর জখম, তাই যথাযথ চিকিৎসার জন্য শুভঙ্করকে শনিবার রাতেই কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। তাঁকে ভরতি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে।
শান্তনু সেন, কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, ‘‘হামলা আর মামলা দিয়ে তৃণমূলকে ঠেকাতে পারবে না বিজেপি। মন ঠিক করে নিয়েছে ত্রিপুরা। যত হামলা করবে বিজেপি, তৃণমূল তত বাড়বে।’’ এদিন সন্ধ্যায় আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠক করেন দুই নেতা। গোটা ঘটনা ও প্রেক্ষিতের বর্ণনা দেন।
এদিকে শনিবার আদালতে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দিলেন শুক্রবার বিজেপির হাতে নিগৃহীতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেত্রী সোলাঙ্কি সেনগুপ্ত। দীর্ঘ প্রায় আড়াইঘণ্টা ধরে বিচারকের কাছে নিজের অভিজ্ঞতা জানান তিনি। তৃণমূলের তরফ থেকে দোষীদের গ্রেফতারির দাবি জোরদার করা হয়েছে।