বাংলা তথা বাঙালির নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি আজ তেমনভাবে চর্চিত নন। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন অনেক নক্ষত্রের মাঝেও নিজস্ব কাব্যদ্যুতিতে ভাস্বর এই কবি সর্বজনশ্রদ্ধা আর সম্ভ্রম আদায় করে নিয়েছিলেন। তাঁর মতো বিলেত-ঘোরা বাঙালি স্বদেশি কবি বাংলার স্বাধীনতার আন্দোলনে অন্যতম উদ্দীপক উৎস বলে চিরকাল বাংলা সাহিত্য তথা স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন। যাঁরা সমঝদার ও সচেতন, দেশের এবং সাহিত্যরসের খবরাখবর রাখেন, কৃতী পুরুষকে শ্রদ্ধা জানাতে পিছপা নন, এই কবি হয়তো তাঁদের কাছে ধরা দেন। একালে তেমন গবেষক, বোদ্ধাদের সংখ্যা দুঃখজনক ভাবে ক্ষয়িষ্ণু। বিশ্বায়নের সর্বগ্রাসী সময়ে স্বদেশি ভাবনার আত্মমর্যাদাবোধ জিইয়ে রাখার ক্ষেত্রে বিপদটা হয়তো সেখানেই।
গিরিশ-প্রতিভা তখন আকাশের মধ্যভাগে। গানে-নাটকে গৈরিশ ধারা একটি স্বতন্ত্র ধারা। সেই ধারায় অবগাহন করেছেন তৎকালীন সুধীসমাজ। সমান্তরাল গতিতে এগিয়ে চলেছেন রাবীন্দ্রিক ধারাও। তখন এই ধারায় গা ভাসাচ্ছেন সেকালের বিদ্বজ্জনেরা। কেননা, বিশ্বসাহিত্যের গানের পাতায় তখন পুরোদস্তুর জায়গা করে নিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের (Dwijendralal Ray) কাব্যপ্রতিভা, তাঁর আপন গুণের নৈপুণ্যে উল্লেখিত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে এক আসনে বসার যোগ্যতা প্রমাণ করেছিল। কবি বা গীতিকার আর নাট্যকারের যুগ্ম ভাবনায় সেই গুণের বহিঃপ্রকাশ। ঊনবিংশ শতাব্দীর অবিভক্ত বাংলাদেশে দেখা চেতনার বিকাশে গান (বিশেষ করে নাটকের গান) হয়ে উঠেছিল সব থেকে বড় মাধ্যম। সেক্ষেত্রে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের (গান) রচনার অভিনবত্ব দৃষ্টি আকর্ষণ করে আপামর স্বদেশবাসীর।
বাংলা নাট্যসাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন, দীনবন্ধু মিত্র, গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবিস্মরণীয় অবদান বাংলা নাট্যধারাকে বিপুল প্রসারী করে যে আবহমণ্ডল সৃষ্টি করেছিল তারই স্রোতে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (Dwijendralal Ray) কবি ও নাট্যকার হিসাবে আবির্ভূত হয়ে আমাদের নাট্যচেতনার দৃষ্টিভঙ্গিকে বিপুল বিস্তৃত করতে সহায়ক হয়েছিলেন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় নাট্যকল্পনাকে গভীর ও একটা সূক্ষ্ম শিল্পের ওপর স্থাপিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি বাংলা নাট্যসাহিত্যে প্রবেশ করে পূর্বসূরি নাট্যকারদের অতিক্রম করলেন আপন গুণ এবং নাট্যশৈলীতে। এ অতিক্রম মোটেই সহজ ছিল না। তাঁর পূর্বে বাংলা নাটকে মূলত প্রহসন, ব্যঙ্গধর্মিতা, পৌরাণিকতা, সামাজিকতা ও সামান্য কিছু ঐতিহাসিকতা নির্ভর কাহিনি, তথ্য আমাদের প্রায় সীমিত করে তুলছিল। প্রাক্ দ্বিজেন্দ্রলাল-যুগে ঐতিহাসিক নাটক বলতে আমরা যা বুঝি, তা একমাত্র কৃষ্ণকুমারী ও গিরিশচন্দ্রের দু-একটি গৌণ নাটক ছাড়া আর কোনোও নাটক লিখত হয়নি। অবশ্য নীলদর্পণ নাটক লেখার পিছনে একটি মৌলিক চেতনা কাজ করলেও তা কিন্তু ঐতিহাসিক নাটকে তার পদসঞ্চার এক ধরনের সামাজিক ও ঐতিহাসিক দলিল হয়ে রয়েছে। উনিশ শতকের একটি বিশেষ সংকটপূর্ণ সমস্যা ও অত্যাচারের বাস্তব কাহিনি ঐতিহাসিক গুরুত্ব দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ার নয়। এই প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্রের ঐতিহাসিক উপন্যাসের কথা আমাদের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে। স্বয়ং গিরিশচন্দ্র সেগুলির নাট্যরূপ দিয়ে অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন কিন্তু মৌলিক ঐতিহাসিক কাব্য-নাটকে তিনি কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি। নবীনচন্দ্র সেনের পলাশির যুদ্ধ বাংলাসাহিত্যে প্রথম দেশপ্রেমমূলক ঐতিহাসিক কাব্য যদিও রঙ্গলালের পদ্মিনী উপাখ্যান আখ্যান কাব্যটি ইতিহাসের অনুসরণ করে একটি স্বদেশবাসীকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা উজ্জ্বল হয়ে দীর্ঘস্থায়িত্ব লাভ করেনি। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (Dwijendralal Ray) একটি ঐতিহাসিক নাট্যচেতনার অবক্ষয়কালে আবির্ভূত হয়ে তাঁর কবি মনের আবেগ স্পর্শ ও ভোরের জোয়ারে ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাসকে স্বদেশবাসীর মূর্তি পরিগ্রহ করেছেন।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের (Dwijendralal Ray) নাটকগুলিকে মূলত চারটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
প্রহসন-ধর্মী নাটক : একঘরে (১৮৮৯), কল্কি অবতার (১৮৯৫), বিরহ (১৮৯৭), ত্র্যহস্পর্শ/সুখী পরিবার (১৯০০), প্রায়শ্চিত্ত (১৯০২), পুনর্জন্ম (১৯১১), আনন্দ বিদায় (১৯১২)।
ঐতিহাসিক নাটক : তারাবাঈ (১৯০৩), প্রতাপ সিংহ (১৯০৫), দুর্গাদাস (১৯০৬), সোরাব রুস্তম্ (১৯০৮), নূরজাহান (১৯০৮), মেবার পতন (১৯০৮), সাজাহান (১৯০৯), চন্দ্রগুপ্ত (১৯১১), সিংহল বিজয় (১৯১৫ )।
পৌরাণিক নাটক : পাষাণী (১৯০৩), সীতা (১৯০৮), ভীষ্ম (১৯১৪)।
সামাজিক নাটক : পরপারে (১৯১২), বঙ্গনারী (১৯১৫)।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে ‘হাসির গানের রাজা’ বলা হয়। হাসির সঙ্গে সামাজিক বিষয়ের ব্যঙ্গ ও ধিক্কার মিলেমিশে তাঁর মনের মধ্যে এমন একটা জগৎ সৃষ্টি করল যা তাঁকে প্রহসন লেখায় প্রেরণা দিল। ‘একঘরে’ প্রহসনে রস ঠিকমতো জমে না ওঠায় ‘কল্কি অবতার’কে অনেকে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের (Dwijendralal) প্রথম প্রহসন বলে অভিহিত করে থাকেন। ত্র্যহস্পর্শ/সুখী পরিবার— বিবাহবিভ্রাটকে কেন্দ্র করে লেখা প্রায়শ্চিত্ত— বিলাতফেরত সমাজের আচার- আচরণ-কে নিয়ে লেখা। আনন্দ বিদায় রবীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করে লেখা।
আরও পড়ুন: স্তম্ভের সিংহ হিংস্রতর হল অতঃপর কী দাঁড়াল!
ইতিহাসধর্মী নাটকগুলির মধ্যে দ্বিজেন্দ্রলালের (Dwijendralal Ray) নাট্যপ্রতিভার গভীর ছাপ দেখা যায়। ‘প্রতাপ সিংহ’, ‘দুর্গাদাস’, ‘নূরজাহান’, ‘মেবার পতন’, ‘সাজাহান’, রাজপুত বীরত্ব আর মুঘল যুগের কাহিনিগুলিকে নিয়ে তিনি অসাধারণ কৃতিত্বের সঙ্গে নাটকীয়তা সৃষ্টি করেছেন। ‘দুর্গাদাস’, ‘মেবার পতন’ টডের অ্যানালস অ্যান্ড অ্যান্টি-কুইটি অফ্ রাজস্থান-কে নিয়ে লেখা।
পৌরাণিক নাটকগুলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ হল— ‘সীতা’। রামায়ণের উত্তরাকাণ্ডের বিষয়কে কেন্দ্র করে এই নাটক রচিত। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের প্রথম পৌরাণিক নাটক হল ‘পাষাণী’।
সামাজিক নাটক রচনাতে তিনি খুব একটা সফল হননি। তবে ‘বঙ্গনারী’ নাটকে পণপ্রথা ও বাল্যবিবাহ সমস্যা গুরুত্ব লাভ করেছে। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হল— ‘সিংহল বিজয়’।
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জীবনীকার হলেন দেবকুমার চৌধুরি।
নাটকের চরিত্রচিত্রণ রীতি, মানসিক দ্বন্দ্ব প্রভৃতিতে শেক্সপিয়ারীয় রীতি অনুসরণ করার ঝোঁক দেখা গেছে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মধ্যে। কিন্তু আবেগ আর উত্তপ্ত বাগ্ধারায় ভাষারীতির উত্থান-পতন, কাব্যধর্মী সংলাপে জার্মান নাট্যকার শীলারের প্রভাব দেখা যায়। বাংলা নাট্যসাহিত্যে আধুনিকতার উত্তরণে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদান অনস্বীকার্য। প্রসঙ্গত আলোচ্য কবি-নাট্যকার ও গীতিকারের পরিচয় এখন জেনে নেওয়া যাক।
নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই তাঁর জন্ম হয়। বাবা কার্ত্তিকেয়চন্দ্র রায়। উনি ছিলেন আত্মচরিত রচয়িতা। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বন্ধু ছিলেন তিনি। আবার অন্যদিকে তিনি ছিলেন কৃষ্ণনগরের মহারাজার দেওয়ান। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বা ডি এল রায় সরকারি বৃত্তি নিয়ে কৃষিবিদ্যা শিক্ষালাভের জন্য ইংল্যান্ডে যান। সালটা ১৮৮৪। ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে সেবছরই এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সসম্মানে। বছর তিনেক পর ইংল্যান্ড থেকে স্বদেশে ফিরে আসেন তিনি এবং ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদে আসীন হন। এরই মধ্যে তিনি অল্প সময়ের জন্য প্রথমে সেটেলমেন্ট অফিসে, পরে আফগারি দফতরে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। সরকারি দফতরে নানাভাবে যুক্ত থেকেও এই মানুষটি ব্রিটিশ সরকারের দমন-পীড়ন নীতির বিরুদ্ধে কলম ধরেন (ভঙ্গ্যান্তরে)। আর বাংলা সাহিত্যের যারপরনাই সেবা করে গেছেন। পরন্তু কখনও ক্লান্ত বোধ করেননি। প্রথম মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত তাঁর কবিতাটির নাম ‘শ্মশান সঙ্গীত’। নবভারত পত্রিকায় ১৮৮৩ সালের নভেম্বর মাসের সংস্করণে কবিতাটি প্রকাশিত হয়। তখন তিনি বছর কুড়িতে পা রেখেছেন। ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। প্রভা, প্রবাসী, ভারতী প্রভৃতি পত্রিকার জন্যও বহু প্রবন্ধ রচনা করেন।
স্বদেশি গান, হাসির গান, প্রেমের গান, ভক্তিমূলক গান এবং তাঁর রচিত নাটকগুলি তাঁকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল। ডি এল রায় রচিত গ্রন্থগুলি কালোত্তীর্ণতা লাভ করেছিল। ব্যাখ্যা করলে দেখা যায় উপকরণ হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন বিষয় নির্বাচন, বক্তব্যের প্রাসঙ্গিকতা, শব্দচয়ন, চরিত্রগুলির সজীবতা, গানের ব্যবহার, সর্বোপরি পরিবেশনার নৈপুণ্যতা। দ্বিজেন্দ্রলাল রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল—রাণা প্রতাপ, তারাবাঈ, নূরজাহান, দুর্গাদাস, চন্দ্রগুপ্ত, সাজাহান, মেবার পতন, ত্র্যহস্পর্শ, পাষাণী, বিরহ, পরপারে, পুনর্জন্ম, আষাঢ়ে, হাসির গান প্রভৃতি। এ-ছাড়াও ইংরেজিতে তাঁর Crops of Bengal এবং Lyric of India. নামে দুটি গ্রন্থ দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল।
ডি এল রায়ের নাটকের গান সে-সময় কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে মানুষের মুখে মুখে ফিরত। এই গান নিয়ে আলোচনায় একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, তাঁর গানে যেমন সাঙ্গীতিক মূল্য রয়েছে, তেমনই আছে কাব্যমূল্য। এই দুটি একসঙ্গে থাকায় নাটকের চরিত্রগুলিও প্রাণবন্ত হয়েছে। যা চরিত্র বিকাশের পক্ষেও সহায়ক ছিল। প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, রবীন্দ্রনাথের গানে যেমন দেখা যায় ধ্রুপদের বিস্তার, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানে তেমনই লক্ষ্য করা যায় খেয়ালের নান্দনিকতা। তার মধ্যে আছে প্রাণচাঞ্চল্য, আছে ছোট-ছোট তালের অলঙ্করণ, এরই মাঝে আছে টপ্পার কারুকার্য। ধ্রুপদাঙ্গের গানে রয়েছে খেয়ালবর্গীয় তান। নাটককে কেন্দ্র করেই এই সব গান বাঁধা হয়েছিল।
ডি এল রায়ের স্বদেশি গান বাংলা তথা ভারতবর্ষের এক অমূল্য সম্পদ। এই গানগুলি রচনা করতে গিয়ে তিনি এনেছেন দুর্গম ওজস্বিতা। তিনি একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ছিলেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বিলেতেও গিয়েছিলেন। এজন্য দেশে ফেরার পর সমাজ তাঁকে একঘরে করেছিল। কিন্তু এত কিছুর পরেও তাঁর দেশপ্রেমের খাতে এতটুকু ভাটা পড়েনি। পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে তাঁর নিবিড় পরিচিতি, সেই পরিচিতির প্রকাশ কবির স্বদেশি গান যা বাংলা গানের সীমাকে কয়েক যোজন বিস্তৃত করে দিয়েছিল। স্বদেশি গানগুলিতে কোমলতা আর বলিষ্ঠতার অপূর্ব মিশ্রণ ঘটিয়েছিলেন কবি। রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা অভূতপূর্ব ধর্মসমন্বয় ঘটিয়েছে বিভিন্ন সুরের। কিন্তু দ্বিজেন্দ্রলাল গান রচনা করেছেন সংগঠনের আদর্শ সচেতন শিল্পীরূপে। স্বদেশি আন্দোলনের বিক্ষোভ তাঁকে শুধু স্পর্শ করেনি, বিচলিত করেছিল। তাঁর স্বদেশভক্তির নমুনা পাওয়া যায় আর্যগাথা গ্রন্থে—
‘তোমা বিনা অন্য কারে
মা বলে ডাকিতে।
কখনো বাসনা মাতঃ
নাহি হয় চিতে।।’
আর্যগাথার অন্তর্গত আর্যবীণা গ্রন্থে প্রায় ৩৮টি স্বদেশি গান আছে। ১৮৮৬ সালে বিলেতে প্রকাশিত তাঁর Lyric of India গ্রন্থে পরবর্তী জীবনের স্বদেশি গানের জ্বলন্ত পূর্বাভাস পাওয়া যায়। কবির রচিত The land of the Sun এই গানটি আজ লুপ্ত প্রায়। শুনতেই পাওয়া যায় না। অথচ ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’ এবং ‘সকল দেশের সেরা, সে যে আমার জন্মভূমি’— এই কথাগুলির বীজ ওই ইংরেজি গানের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।