শান্তনু বেরা, কাঁথি: বিজেপির (BJP) হয়ে আগেও কাঁথি এসেছি। আগে ছ’গোল করলে এখন বিজেপিকে ৩৬ গোল দেবে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। রবিবার কাঁথির মাটিতে দাঁড়িয়ে এই ভাষাতেই হুঙ্কার দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র তথা বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়। ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিসভায় কাঁথিতে এসে এদিন অধিকারী পরিবারকে সারদা থেকে শ্মশান কেলেঙ্কারি-সহ নানা ইস্যুতে ধুয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কুণাল ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অখিল গিরিরা। রবিবার কাঁথি ডর্মিটরি মাঠে কানায় কানায় পূর্ণ জনসমাবেশে সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন কুণাল। কাঁথির জনসভায় বিশাল জমায়েত দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বলেন, কাঁথিতে অধিকার একমাত্র মানুষের। এই সভা প্রমাণ করছে কাঁথির অধিকারী কেবল আপনারাই, কোনও অধিকারীরা নয়। মূল্যবৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির তীব্র সমালোচনা করে বাবুল বলেন, মানুষ যা চায়, তার উল্টোটাই করা যেন বিজেপির কাজ। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগে বহুবার এই জেলায় এসেছি। তখন যেন একটা পরিবারের গড় ছিল। আজ এত বড় জনসভার মাধ্যমে অখিলদা, সুপ্রকাশ ও তরুণরা প্রমাণ করে দিয়েছেন কাঁথির মাটি আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের গড়। এই জেলার বাসিন্দাদের বলছি, ২৪শে জেলার দুটো লোকসভা আসন থেকে ওদের উৎখাত করে দিন। আর বিরোধী দলনেতাকে বলছি, যতই নাচানাচি করুন, ২৪শের নির্বাচনের পরে দূরবিন দিয়ে বঙ্গ বিজেপিকে খুঁজতে হবে। তাই এখন ভাল করে কীর্তন ও খোল বাজানো শিখে নিন। কারণ তখন শুধু কীর্তন শুনে ও খোল বাজিয়ে দিন কাটাতে হবে। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, অধিকারীরা যে দুর্নীতিগ্রস্ত তা অনেক আগে থেকেই আমরা বলে আসছিলাম। এবার একে একে কেলেঙ্কারি ফাঁস হচ্ছে। নিজেদের পিঠ বাঁচাতে অধিকারীরা বিজেপিতে গিয়েছে। এখন সিবিআই, ইডি কোথায় গেল? সারদা থেকে শ্মশান কেলেঙ্কারি, এসব কি ওরা দেখতে পাচ্ছে না? প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর বলেন, কিছুদিন আগেও রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরিকে ‘মাছুয়ামন্ত্রী’ ও ‘হাফপ্যান্ট মন্ত্রী’ বলে আক্রমণ করত শুভেন্দু অধিকারী। রাষ্ট্রপতি পদে বিজেপি যাঁকে প্রার্থী করেছে সেই দ্রৌপদী মুর্মুও একসময় মৎস্যমন্ত্রী ছিলেন। আবার শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীও কেন্দ্রে ‘হাফপ্যান্ট মন্ত্রী’ ছিলেন। এসব তথ্য কি শুভেন্দুর জানা নেই? দক্ষিণ কাঁথি ও উত্তর কাঁথি বিধানসভা এলাকা মিলিয়ে এদিনের সভার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি ও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক তরুণ জানা। এছাড়াও এদিনের সভায় হাজির ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) অন্যতম সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জেলা সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারউদ্দিন, জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিকাশ বেজ, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস, প্রাক্তন বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য ও অর্ধেন্দু মাইতি-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন: বিজেপির সম্প্রদায়িক রাজনীতির জবাব, সম্প্রীতির পুজো কাঁথিতে