শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ইস্যুতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে সাতসকালে আচমকাই ইডির হানা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কেন্দ্রীয় বাহিনী সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) আপ্ত-সহায়ক, নিরাপত্তারক্ষীদের ফোন জমা নেওয়া হয়। সিআরপিএফ জওয়ানরা ঘিরে রাখেন মন্ত্রীর বাড়ি। অন্যদিকে, পার্থবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির টানা জেরায় অসুস্থ বোধ করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডি আধিকারিকরাই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করান। এসএসকেএম থেকে চিকিৎসকদের নিয়ে আসা হয় নাকতলার বাড়িতে।
অন্যদিকে, এদিনই পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এক আত্মীয়ের বাড়িতে এদিনই হানা দেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দাবি করেছে তৃণমূল। এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) এজেন্সির ভূমিকা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দেশ একটি অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলছে। বিরোধীরা প্রতিবাদ করতে চাইলেই নখ-দাঁত বের করে দমন-পীড়ন নীতি চালাচ্ছে কেন্দ্র। একুশে জুলাইয়ের এই সুবিশাল সমাবেশ ভারতের আরও কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই মাঝরাত থেকেই প্রতি হিংসার রাজনীতি শুরু করেছে।”
বিজেপিকে তোপ দেগে চন্দ্রিমা (Chandrima Bhattacharya) আরও বলেন, “আমাদের মেরুদণ্ড আছে। ওদের মেরুদন্ড মানে ইডি-সিবিআই। ব্যাপম কেলেঙ্কারি, অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কেলেঙ্কারি নিয়ে কিছু হয় না। সুদীপ্ত সেন নাম বলার পরেও সারদায় শুভেন্দুর কিছু হয় না। নারদায় কিছু হয় না বিজেপি নেতার। কেন একুশে জুলাইয়ের পরদিনই আমাদের নেতাদের বাড়িতে গিয়ে জেরা? আমরা কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না।”
আরও পড়ুন: সিবিএসই দ্বাদশের সফল পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর
সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের নেতা বা কর্মীর কোনও মানসিক বা শারীরিক ক্ষতি হলে আমরা দায়ী করব ইডি-সিবিআইকে। এদের জন্য আমরা সুলতান আহমেদ, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তাপস পালের মতো নেতাদের হারিয়েছি। বিজেপি চাপ সৃষ্টি করে এজেন্সিকে দিয়ে এসব করছে। আসলে আমাদের একুশের সমাবেশ দেখে ভয় পেয়ে এসব করছে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছি, রাজনীতিতে পেরে না উঠে প্রতিহিংসায় সাঁড়াশি আক্রমণ করলে তার মাথা কীভাবে ভোঁতা করতে হয়, তৃণমূল জানে।”
সকাল থেকে ইডি একইসঙ্গে ১৩টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। এবং পিংলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আয়কর দফতরের ট্যাক্স তল্লাশি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, ”ইডি-সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নেই। স্বতন্ত্রতা নেই। নিরপেক্ষ হলে শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকছে না কেন?”