প্রতিবেদন : রাতারাতি পালটে গিয়েছে পরিস্থিতিটা। দেউলপুরের যে ভাঙাচোরা টালির বাড়িতে স্বপ্নের জাল বুনতেন অচিন্ত্য শিউলি, সেই বাড়িতেই সোমবার সকাল থেকে ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছেন কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী ভারোত্তোলকের মা এবং দাদাকে। পাল্লা দিয়ে চলছে মিষ্টিমুখের পর্বও। এদিনই তাঁর বাড়িতে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে এসেছেন বিওএ-র সভাপতি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
আরও পড়ুন-স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা চুরি, তদন্তে সিআইডি
ছেলের সাফল্যে গর্বিত মা পূর্ণিমা শিউলি। তিনি বলছেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যুর পর খুব কষ্ট করে আমাদের দিন কেটেছে। দুই ছেলেকে নিয়ে জরির কাজ করে কোনও রকমে দু’বেলার ভাত জুটত।’’ উল্লেখ্য, ৯ বছর আগে মারা যান অচিন্ত্যর বাবা। যিনি পেশায় ছিলেন ভ্যানচালক। পূর্ণিমা দেবী বলছেন, ‘‘ছেলেটা খুব কষ্ট করে এই জায়গায় পৌঁছেছে। ওর জন্য সবাই আমাদের সম্মান করছে। খুব গর্ব হচ্ছে অচিন্ত্যর জন্য। এতদিনের সব কষ্ট ভুলে গিয়েছি।’’
আরও পড়ুন-রেলের বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৃণমূলের গণ-অবস্থান
অচিন্ত্যর দাদা অলোকও ভারোত্তোলক ছিলেন। কিন্তু সংসারের হাল বইতে গিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু ভাইয়ের স্বপ্ন যাতে ভেঙে না যায়, সেদিকে কড়া নজর রেখেছিলেন। দাদার হাত ধরেই ২০১০ সালে কোচ অষ্টম দাসের কাছে ভারোত্তোলন শুরু করেন অচিন্ত্য। যদিও এরজন্য কোনও বাড়তি কৃতিত্ব দাবি করতে চান না অলোক। উল্টে তিনি বলছেন, ‘‘ভাই কঠোর পরিশ্রমের ফল পেল। এই জায়গায় পৌঁছনোর জন্য ওকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে। আগামী দিনেও ভাইয়ের পাশে দাঁড়াতে চাই। ও যাতে আরও অনেক সোনা জিততে পারে।’’
বিওএ সভাপতি এদিন দেউলপুরে গিয়ে অচিন্ত্যর পরিবার ও তাঁর কোচের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি অচিন্ত্যর ক্লাবের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছেন। স্বপন বলেছেন, তাঁদের তরফে সরকারের কাছে অচিন্ত্যর জন্য একটি চাকরির সুপারিশ করা হবে। এছাড়া তিনি বার্মিংহামে ফোন করে সোনার ছেলের সঙ্গে কথাও বলেছেন। অচিন্ত্য তাঁর কাছেও সাহায্য চেয়েছেন। যাতে প্যারিস অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন।