সংবাদদাতা, হাওড়া : খুদে পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আরও বেশি মনোনিবেশ করাতে অভিনব উদ্যোগ স্কুলের। প্রত্যেক পড়ুয়াদের হাত দিয়ে স্কুল চত্বরেই রোপণ করা হচ্ছে হরেকরকম গাছ। শুধু রোপণ করাই নয়, গাছগুলির পরিচর্যার দায়িত্বভারও দেওয়া হয়েছে ওই পড়ুয়াদের। কোন গাছ কোন পড়ুয়া দেখাশোনা করছে তা লিখে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব পড়ুয়া গাছগুলি দেখাশোনা করছে প্রতিমাসে তাদের জন্মদিবসগুলিকে উদযাপন করতে স্কুলের তরফে মাসের শেষদিকে কোনও একটা দিনে সমস্ত পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষসখা জন্মমাস পালন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-হাবড়ায় উদ্ধার তাজা বোমা, গ্রেফতার আইএসএফ নেতা
উলুবেড়িয়ার হাটগাছায় বাড়মংরাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিনব এই উদ্যোগের তারিফ করছেন অভিভাবক থেকে শুরু এলাকার বহু মানুষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজদূত সামন্ত জানান, ‘‘আমাদের এই উদ্যোগের ফলে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে অনুপস্থিত থাকার ঘটনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। কোন পড়ুয়ার গাছটা ঠিকঠাক বেড়ে উঠছে সেই নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এর ফলে তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহও অনেক বেড়েছে। আশপাশের অনেক বেসরকারি স্কুল থেকেও ছেলেমেয়েরা আমাদের স্কুলে এসে ভর্তি হচ্ছে।’’ স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কীভাবে বাড়ানো যায় সেই নিয়ে সহশিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার সময়েই বিষয়টি মাথায় আসে প্রধান শিক্ষকের। তারপরই আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা সহ বিভিন্ন ফুলের গাছ এবং আমলকী, হরীতকী, বয়রা, বাসকের মতো একাধিক ভেষজ উদ্ভিদও বসানো হয় স্কুল চত্বরে।
আরও পড়ুন-শস্যবিমার ফর্ম পূরণ করে সাহায্য তৃণমূল কর্মীদের
প্রতিটি গাছই ছাত্রছাত্রীদের হাত দিয়ে পোঁতা হয়। প্রতিটি গাছে যেসব ছাত্র সেগুলি দেখাশোনা করছে তাদের নাম, ক্লাস ও জন্মতারিখ লিখে রাখা হচ্ছে। খুদে পড়ুয়ারাই গাছগুলি পরিচর্যা করছে। এরপর প্রতিমাসে স্কুলের যেসব পড়ুয়ার জন্মদিন থাকে তাদের নিয়ে তা বৃক্ষসখা জন্মমাস হিসেবে পালন করা হয়। সেখানে অভিভাবকরাও শামিল হন। ওই অনুষ্ঠানে প্লাস্টিক বর্জনে সচেতনতার বার্তা, কচিকাঁচাদের মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করতে অভিভাবকদের কী করতে হবে তা তুলে ধরার পাশাপাশি ‘জল ধরো জল ভরো’র মতো সরকারি প্রকল্পের বিষয়েও বার্তা দেওয়া হয়।