প্রতিবেদন : স্বাধীনতা দিবসের দিনই এক গুরুত্বপূর্ণ দাবি জানালেন সুভাষচন্দ্র বসুর কন্যা অনিতা (বসু) পাফ (Anita Bose Pfaff)। তিনি বললেন, নেতাজির চিতাভস্ম বা দেহাবশেষ ভারতে ফিরিয়ে আনা হোক। কারণ এই চিতাভস্মের ডিএনএ পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে ওই চিতাভস্ম নেতাজির কি না। জার্মানির বাসিন্দা অর্থনীতিবিদ অনিতা বলেছেন, নেতাজির দেহাবশেষ ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি ভারত ও জাপানের সরকারের কাছে একাধিকবার আবেদন জানিয়েছেন। তবে তাঁর কথায় কর্ণপাত করেনি দুই দেশের সরকার। কিন্তু নেতাজির মৃত্যু নিয়ে যাবতীয় ধোঁয়াশা দূর করতে জাপানের রেনকোজি মন্দির থেকে চিতাভস্ম ফিরিয়ে এনে অত্যাধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ডিএনএ পরীক্ষা করাই একমাত্র উপায়।
এদিন অনিতা (Anita Bose Pfaff) বলেন, দেশের স্বাধীনতা দেখে যেতে পারেননি নেতাজি। কিন্তু তাঁর দেহাবশেষ বা চিতাভস্ম যদি ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়, সেটাই হবে তাঁর প্রতি বর্তমান প্রজন্মের শ্রদ্ধার্ঘ্য। তাঁর দাবি, ভারত এবং জাপান দু’দেশের সরকারই এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে।
নেতাজি কন্যা মনে করেন, বর্তমানে প্রযুক্তি অনেক উন্নত ও আধুনিক হয়েছে। তাই এখন চিতাভস্ম থেকেই ডিএনএ বের করে পরীক্ষা করা যায়। অনেকেই মনে করেন, জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা চিতাভস্ম নেতাজির নয়। ডিএনএ পরীক্ষা করা হলেই পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। তিনি নিজেও ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য প্রস্তুত আছেন। এই প্রবীণ অর্থনীতিবিদ আরও বলেছেন, রেনকোজি মন্দিরের পুরোহিত এবং জাপান সরকার ইতিমধ্যেই নতুন করে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে রাজি হয়েছে। অনিতার আবেদন, নেতাজির চিতাভস্ম ফিরিয়ে আনার জন্য দেশবাসী যেন তাঁর দাবিকে সমর্থন করেন।
আরও পড়ুন: বেনজির সৌজন্য তৃণমূল বিধায়কের
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও অজানা রয়ে গিয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুরহস্য। ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট জাপানের তাইহোকু এয়ারবেসে একটি বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয় বলে দাবি করা হয়। কিন্তু নানা কারণে সেই দাবি মেনে নিতে নারাজ ভারতের অধিকাংশ মানুষ। নেতাজির মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে বিভিন্ন সময়ে মোট তিনটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে আজও জানা যায়নি, কবে কীভাবে নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অনিতার দাবি মেনে যদি জাপান থেকে নেতাজির চিতাভস্ম ফিরিয়ে এনে ডিএনএ পরীক্ষা করা যায়, তবে হয়তো এই অজানা রহস্যের সমাধান হতে পারে।