প্রতিবেদন : বেনজির সংকটের মুখোমুখি ভারতীয় ফুটবল। ফিফা ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে নির্বাসিত করার পর প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল এ দেশের ফুটবল। অন্ধকারে সুনীল ছেত্রীদের ফুটবল ভবিষ্যৎ। নির্বাসন উঠলেও র্যাঙ্কিং শুরু হবে শূন্য থেকে। আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ভারতকে নিষিদ্ধ করার পর অক্টোবরে ভারতের মাটিতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। নির্বাসন বহাল থাকলে ভারত বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারবে না। স্বপ্নভঙ্গ হতে চলেছে মোহনবাগানেরও। ৭ সেপ্টেম্বর যুবভারতীতে এএফসি আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনাল খেলার কথা জনি কাউকো, প্রীতম কোটালদের। নির্বাসন বহাল থাকলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হারাবেন তাঁরাও। নতুন বিদেশি বা আন্তর্জাতিক ফুটবলার সইয়ের উপরও নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ভারতীয় ক্লাব থেকে বিদেশের ক্লাবে সই বা বিদেশের ক্লাব থেকে ভারতীয় ক্লাবে সই করতে পারবেন না কোনও খেলোয়াড়।
আরও পড়ুন-ভাগাড়ে ২০ মানবভ্রূণ
ক্ষোভে ফুঁসছেন ক্লাব কর্তারা। মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘এটা মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গল নয়, ভারতীয় ফুটবলের আজ অন্ধকার দিন। এই পরিস্থিতি তৈরি হল কেন? ২০১৯-২০ সালে ফেডারেশনের কমিটি নির্বাচন করে ফেললে আজ এই দিন দেখতে হত না। কয়েকজন নিজেরা ক্ষমতা আঁকড়ে থেকে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যারা এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য দায়ী তাদের চিরতরে ফুটবল থেকে নির্বাসনে পাঠানো উচিত। আমরা নিজেরা মিটিং করে ফেডারেশনকে জানাব, কেন আপনাদের জন্য আমাদের ভুগতে হবে? বুধবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি আছে। আমি মনে করি, ব্যক্তিগত স্বার্থ দূরে রেখে সবাই মিলে মহামান্য আদালতকে বলুক, সিওএ-কে সরিয়ে দিয়ে ফেডারেশনের কমিটি যাতে ফিফার সংবিধান মেনে নির্বাচন পরিচালনা করে, তার ব্যবস্থা করা হোক।’’
আরও পড়ুন-অন্যতম সেরার স্বীকৃতি পেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, গর্বিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘আমাদের সব বিদেশি সই হয়ে গিয়েছে। মনে হয় না, প্লেয়ারদের আন্তর্জাতিক ছাড়পত্র পেতে কোনও সমস্যা হবে। তাই কোনও সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু এই পরিস্থিতি যাদের জন্য তৈরি হল, তাদের শাস্তি দেওয়া হোক। তবে আমি আশা করছি, বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ইতিবাচক একটা রায় দেবে। দ্রুত ফেডারেশনে নির্বাচন করে নির্বাসন তোলা সম্ভব হবে।’’
পাঁচ বিদেশি সই হয়ে যাওয়ায় আপাতত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না মহামেডান স্পোর্টিংকে। ক্লাব সচিব দানিশ ইকবাল বললেন, ‘‘আমরা ভাগ্যবান, অনেক আগেই পাঁচ বিদেশি সই করিয়ে ফেলেছি। তবে নির্বাসন না উঠলে ষষ্ঠ বিদেশি সই করতে পারব না। আমরা চাই দ্রুত ফিফার নিয়ম মেনে ফেডারেশনে নির্বাচন হোক। এই পরিস্থিতি কাম্য ছিল না। ফেডারেশন কর্তাদের অপদার্থতার জন্য ভারতীয় ফুটবলে কালো দিন নেমে এল। আশা করি, আদালত এবার পরিস্থিতি বুঝবে।’’