মুর্শিদাবাদ জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের দেবকুণ্ড শেখ আব্দুর রাজ্জাক মেমোরিয়াল গার্লস হাই মাদ্রাসা (উঃমাঃ) এর তত্ত্বাবধানে দু’দিন ব্যাপী ২০ ও ২১ অগাস্ট ২০২২ ‘বিজ্ঞান মেলা ২০২২’ নজরকাড়া উৎসবের মেজাজে শেষ হল। এই মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন ড. পার্থ কর্মকার, উচ্চশিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা ও পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি যৌথ সহযোগিতায় ছিল অল ইন্ডিয়া সায়েন্স টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ শাখা। প্রথম দিনের শুভ উদ্বোধন করেন প্রফেসর ড. আবু তাহের কামরুদ্দিন, উপাচার্য, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তথা সভাপতি, পঃবঃ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ।
আরও পড়ুন-ভাবা অ্যাটোমিকে নার্স, সায়েন্টিফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ
প্রথমদিনের অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান মেলার তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন, ড. পার্থ কর্মকার, উদ্বোধক প্রফেসর ড. আবু তাহের কামরুদ্দিন, স্থানীয় বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী, স্থানীয় বিডিও উদয়শঙ্কর মাইতি, লোকাল থানার আইসি জামালউদ্দিন মণ্ডল, বিএমওএইচ সলমান মণ্ডল, প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন ও অন্যান্য অতিথিরা। দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধন করেন আবিদ হাসান, ডাইরেক্টর, ডাইরেক্টরেট অফ মাদ্রাসা এডুকেশন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের সাংসদ আবু তাহের খান, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এই মেলা উৎসবে জেলার মোট ১৭টি সরকারি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা থেকে প্রতিদিন ৩৫০০ করে মোট ৭০০০ ছাত্রছাত্রীর সমাগম হয়েছে। ছাত্রীদের সংখ্যাটা ছিল ৯০%। মোট ৪০০ জন ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা হয় মডেল এক্সিবিশন, ক্যুইজ, পোস্টারিং, বক্তব্য ও প্রতিটি ক্লাসের ৪/৫ ছাত্রছাত্রী নিয়ে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৮০ জন ছাত্রছাত্রীর সায়েন্স অরিয়েন্টেশন।
আরও পড়ুন-ফোরামের থেকে উপহার পাওয়া এই দুর্গামূর্তি অন্যান্য উপহারের সঙ্গে তুলে দেওয়া হবে ইউনেস্কোকে
মডেলের প্রথম স্থান অধিকার করে মির্জাপুর হাজি সলেমান চৌধুরী হাই স্কুল, বেলডাঙা, মুর্শিদাবাদ ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আন্দুলবেড়িয়া হাই স্কুল রেজিনগর, মুর্শিদাবাদ। প্রতিষ্ঠান দুটিকে যথাক্রমে ২০ হাজার ও ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয় এবং প্রতিটি প্রতিযোগিতার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়। দু’দিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক শেখ সফিউজ্জামান সাহেব। এই মেলা প্রসঙ্গে স্থানীয় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের কাছে নতুন এক উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্গানাইজড মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, পিছিয়ে পড়া এলাকায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মেলা বলতে গান-বাজনা, কিছু দোকান, খেলনা বোঝে, সেখানে বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে যে মেলা হয় সেটা একটা নতুন ভাবনা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। সেটা ১০০ শতাংশ সফল। স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিরাট সাড়া পড়েছে। তথাকথিত অনামী প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা দারুণ দারুণ বিজ্ঞান বিষয়ে কাজ করেছে। আমার বিশ্বাস, আগামীতে এই খুদে বিজ্ঞানীরা রাজ্য তথা দেশের বিজ্ঞান গবেষণার মান বাড়াবে।
আরও পড়ুন-ফোরামের থেকে উপহার পাওয়া এই দুর্গামূর্তি অন্যান্য উপহারের সঙ্গে তুলে দেওয়া হবে ইউনেস্কোকে
অল ইন্ডিয়া সায়েন্স টিচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. কমলকৃষ্ণ দে বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে এই ধরনের মেলা আরও বেশি বেশি করে করা দরকার যাতে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার হয়। আয়োজক মাদ্রাসাকে তিনি ধন্যবাদ দেন।