চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: প্রায় তিন বছর পর আবার যুবভারতীর সবুজ গালিচায় সবুজ-মেরুন বনাম লাল-হলুদ (ATK Mohun Bagan- East Bengal) জার্সির মর্যাদার লড়াই। তা-ও আবার মরশুমের প্রথম ডার্বি। টিকিটের হাহাকার ময়দানের চেনা ছবি ফিরিয়ে এনেছে। মহারণের আগের দিন বিকেলে আকাশ ভেঙে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবে টিকিটের লাইন কমেনি। দুর্যোগের মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের টিম বাস অনুশীলনের জন্য ক্লাব তাঁবুর সামনে এসে দাঁড়াতেই লাল-হলুদ জনতার গর্জন। কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইনের সঙ্গে ফুটবলাররা বাস থেকে নেমে মাঠে প্রবেশের সময় সমর্থকদের ডার্বি জয়ের আবদার। কিন্তু বৃষ্টির তোড় এতটাই বাড়ল, বড় ম্যাচের আগের দিন মাঠে নেমে অনুশীলনই করতে পারলেন না ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। টিম বাসে উঠে হোটেলে ফিরে গেল দল। হোটেলে ফিরে গা ঘামান অনিকেত যাদব, অ্যালেক্স লিমারা। মোহনবাগান অবশ্য শনিবার সকালেই ক্লোজড ডোর অনুশীলনে মেগা ম্যাচের প্রস্তুতিতে ফিনিশিং টাচ দিয়ে নেয়।
আরও পড়ুন: কুণালের উপন্যাস সমগ্র, উদ্বােধনে অভিষেক-ব্রাত্য
দু’টি দলেরই (ATK Mohun Bagan) নড়বড়ে শুরু হয়েছে মরশুমে। জয়হীন থেকে বড় ম্যাচে নামছে দুই প্রধান। খাতায়-কলমে জুয়ান ফেরান্দোর দল ধারে-ভারে এগিয়ে থাকলেও একটি ম্যাচ হেরে এবং একটিতে ড্র করে রবিবাসরীয় যুবভারতীতে নামছে তারা। দুই দলই প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করে গোল করতে পারছে না। মোহনবাগান কোচ গত দু’দিন ধরে অনুশীলনে গোলমুখে তীক্ষ্মতা বাড়ানোর পাঠ দিয়েছেন লিস্টন কোলাসো, কিয়ান নাসিরি, মনবীর সিংদের।
পাশাপাশি হয়েছে সেট পিস থেকে গোল করার এবং গোল বাঁচানোর মহড়াও। ইস্টবেঙ্গল অবশ্য রাজস্থান ম্যাচের পর ডার্বির আগে দু’দিন মাঠে নেমে অনুশীলনই করতে পারল না। তবু বড় ম্যাচে তাঁর দল লড়াকু ফুটবল উপহার দেবে বলেই মনে করছেন লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ। ভিপি সুহের, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় চোটের জন্য অনিশ্চিত। চোট রয়েছে নাওরেম মহেশেরও। স্টিফেন যদিও বললেন, ‘‘ডার্বির গুরুত্ব জানি। আমরা বাকিদের থেকে প্রস্তুতিতে পিছিয়ে আছি। ম্যাচ ফিটনেসেরও অভাব রয়েছে। তবু মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আমার ছেলেরা সেরাটাই দেবে।’’ বাগানের স্প্যানিশ কোচ অবশ্য তাঁর আক্রমণাত্মক রণকৌশল থেকে এক চুলও নড়ছেন না। ডার্বি জিততে হুগো বোউমাস, জনি কাউকোর সঙ্গে মনবীর-লিস্টনকে নিয়ে চতুর্ভুজ আক্রমণেই ভরসা রাখছেন জুয়ান। সবুজ-মেরুন কোচ বলেছেন, ‘‘যুবভারতীতে মাঠ ভর্তি দর্শক, সমর্থকদের সামনে ডার্বি খেলতে নামব ভেবে সম্মানিতবোধ করছি। সমর্থকদের এই ম্যাচ ঘিরে আবেগটা জানি। তাই ডার্বি জেতাটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি। প্রথম দুই ম্যাচের ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। ইস্টবেঙ্গল ব্যালান্সড দল। ফলে ম্যাচটা হাড্ডাহাড্ডি হবে। ডার্বিতে কেউ এগিয়ে থাকে না। তাই যে কেউ জিততে পারে।’’
কাউকো বলেছেন, ‘‘ডার্বি কেন, আমাদের যা শক্তি, যে কোনও ম্যাচ জিততে পারি।’’
সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে বহু বড় ম্যাচ খেলেছেন প্রীতম। বলেন, ‘‘সমর্থকরা মাঠে থাকা মানে ১২ জন নিয়ে খেলার মতো ব্যাপার। এই উল্লাস, উন্মাদনায় কেউ যাতে চাপে পড়ে না যায় সেটা বোঝাতে হচ্ছে সবাইকে। নিজেদের ভুলে প্রথম দুই ম্যাচ জিততে পারিনি।