স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু (জন্ম: ১৪ নভেম্বর ১৮৮৯, মৃত্যু: ২৭ মে ১৯৬৪) উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে এক কাশ্মীরি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মদিবসটি পরবর্তীকালে ভারতে শিশুদিবস হিসেবে পালন করা হয়।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা নেহরু ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, পণ্ডিত এবং কূটনীতিতে সিদ্ধহস্ত এক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। লেখক হিসেবেও নেহরু ছিলেন বিশিষ্ট। ইংরেজিতে লেখা তাঁর তিনটি বিখ্যাত বই হল— ‘An Autobiography’, ‘Glimpses of World History’ ও ‘The Discovery of India’.
আরও পড়ুন-সংস্কৃতকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দাবি খারিজ করল শীর্ষ আদালত
মহাত্মা গান্ধীর তত্ত্বাবধানে নেহরু ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীকালে তাঁর মেয়ে ইন্দিরা গান্ধী ও নাতি রাজীব গান্ধী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৮৮৯ সালে এলাহাবাদ শহরে জওহরলাল নেহরু জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মতিলাল নেহরু ও মা ছিলেন স্বরূপরানি। আইনজ্ঞ মতিলাল নেহরু পরে কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তিনিও পিতার মতো একজন আইনজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সঙ্গে-সঙ্গে জাতীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন-সত্যাগ্রহে জেলে ছিলেন! মোদির দাবিকেই খারিজ করে দিল খোদ প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়
গান্ধীর দশর্ন ও নেতৃত্ব জওহরলালকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করে। চম্পারণ আন্দোলনের সময় নেহেরু গান্ধীর সঙ্গে পরিচিত হন। মহাত্মা গান্ধীর প্রভাবে নেহরু পরিবার তাঁদের ভোগ-বিলাসের জীবন ত্যাগ করে খাদির তৈরি কাপড় পরতে শুরু করেন। পিতা মতিলাল নেহরু পরে কংগ্রেস ছেড়ে স্বরাজ পার্টিতে যোগ দিলেও জওহরলাল নেহরু গান্ধীজির সঙ্গে কংগ্রেসেই থেকে যান। ১৯২০ সালে নেহরু নিখিল ভারত শ্রমিক ইউনিয়ন কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪২ সালে কংগ্রেস ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ডাক দেয়। ব্রিটিশ সরকার ১৯৪২ সালের ৯ অগাস্ট নেহরু ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতাকে গ্রেফতার করে। সেইসময় মুসলিম লিগ নেতা মহম্মদ আলি জিন্না মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র ‘পাকিস্তান’-এর দাবি জানান। নেহরু ভারত ভাগকে সমর্থন করেন বলে পরে নানা বিতর্ক হয়। অবশেষে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারত স্বাধীন হলে তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন-সাতমাস মেলেনি বেতন, বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন বিজেপি রাজ্যের সাত শ্রমিক
তাঁর শাসনকালে ভারতে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সব ক্ষেত্রেই ভারত আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নতি লাভ করতে সক্ষম হয়। আধুনির মনস্ক নেহরু ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আধুনিক চিন্তাধারাকে মিশিয়ে সমাজতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সারা ভারতে উন্নয়নের কাজ করেন। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা স্থির করে উন্নয়নকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই সময়ে একটি ভারত-পাকিস্তান ও একটি ভারত-চিন যুদ্ধ হয়। ভারত-পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান নেহরু-লিয়াকত চুক্তি করেন। অন্যদিকে চিনের সঙ্গেও ভারত দ্বিপাক্ষিক নানাবিষয়ে শান্তি স্থাপনে ‘পঞ্চশীল চুক্তি’ স্বাক্ষর করে।
আরও পড়ুন-বাঙালির ফুটবল আর দুর্গাপুজো দুটোই তুলনাহীন, অকপট সৌরভ
উল্লেখযোগ্য উদ্ধৃতি
1. The man who has gotten everything he wants is all in favor of peace and order.
2. Failure comes only when we forgot our ideals and objectives and principles.
3. There is perhaps nothing so bad and so dangerous in life as fear.
4. The person who runs away exposes himself to that very danger more than a person who sits quietly.
5. Those who are prepared to die any cause are seldom defeated.
6. Life is like a game of cards. The hand that is dealt you represents determinism, the way you play it is free will