মণীশ কীর্তনীয়া (মালবাজার থেকে ফিরে): বাগান (Tea Garden Workers) শ্রমিকদের খেপিয়ে চা-বলয়ে অশান্তির আপ্রাণ চেষ্টা করছে সিপিএম। পিছন থেকে উসকানি দিচ্ছে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ির মালবাজারে ঐতিহাসিক চা-শ্রমিক সমাবেশে চা-বাগানের শ্রমিক স্বার্থে একগুচ্ছ ঘোষণা করে গিয়েছেন। তারপর থেকেই আরও জোরালভাবে চা-বাগান শ্রমিকদের খেপানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিকল্পনায় চা-বলয়ের সিপিএম নেতা জিয়াউল আলম সামনে রয়েছেন। পিছন থেকে মদত দিচ্ছেন বিজেপির জন বার্লার মতো বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা। চা-বলয়ের শেড গার্ডেনের সঙ্গে জড়িত যেসব প্রোজেক্ট গার্ডেন রয়েছে, মূলত সেইসব জায়গার শ্রমিকদের খেপিয়ে আন্দোলনের নামে পুজোর আগে বাগানগুলিতে লকআউটের ছক করেছে সিপিএম-বিজেপি। এতে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করা সহজ হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যা কাজে লাগানো যাবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এখন চা-বাগান শ্রমিকরা (Tea Garden Workers) মজুরি পান ২৩২ টাকা। কিন্তু শেড বাগানের অসংগঠিত শ্রমিকরা মজুরি পান ১৯৩ টাকা। কারণ, ইন্ডাস্ট্রির নিয়ম মেনে চা-বাগান শ্রমিকদের ২৩২ টাকা হাজিরা-সহ বাকি সবরকমের সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়। পিএফ-গ্র্যাচুইটি সব দিতে হয়। কিন্তু এই বাগান কর্তৃপক্ষ যখন আশপাশের ছোট ছোট ব্যক্তি মালিকানার বাগান কিনে নিয়ে শ্রমিক দিয়ে পাতা তোলার ব্যবস্থা করেন তখন তা প্রোজেক্ট গার্ডেনে পরিণত হয়। এই প্রোজেক্ট গার্ডেনের শ্রমিকরা শেড গার্ডেনের মতো হাজিরা ও বাকি সুযোগ-সুবিধা পান না৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এই বিষয়টাকে স্ট্রিম লাইনে আনার চেষ্টা করছে। পুজোর আগে না হলেও পুজোর পরপরই প্রোজেক্ট গার্ডেনের মজুরি নিয়ে নোটিফিকেশন জারি করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু তার আগে ঘোলাজলে মাছ ধরতে চাইছে সিপিএম-বিজেপি। মজুরির বৈষম্য রয়েছে— এসব বলে শ্রমিকদের উসকে দিয়ে চা-বলয়ে অশান্তি পাকাতে চাইছে।
আরও পড়ুন-প্রসঙ্গ: রেলের ওভারব্রিজ, শতাব্দীর জবাবি চিঠি কংগ্রেসকর্মীকে
আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আসলে সিপিএম তো শূন্য হয়ে গেছে। বিজেপি নিজেদের বিপদ বুঝতে পারছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওদের কিচ্ছু করার নেই। এর আগে চা-বাগান শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে ভোট নিয়েও বিজেপি ওদের জন্য কিছুই করেনি। মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শুধু। তাই বাগান শ্রমিকরা ওদের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। গত শনিবার চা-শ্রমিকদের সম্মেলন এবং রবিবার চা-শ্রমিক সমাবেশে আমাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রমিক স্বার্থে একাধিক ঘোষণা সিপিএম-বিজেপির রাতের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে। তাই ওরা এখন আরও বেশি করে সবটা ঘেঁটে দিতে চাইছে। কিন্তু এই পরিকল্পনায় ওরা সফল হবে না। চা-বাগান শ্রমিকরা ওদের আসল চরিত্র ধরে ফেলেছেন।