সুমন তালুকদার: ভক্তি ও কল্পনার দুর্গা এবার বাস্তবের মাটিতে। ‘ভাগাড়ের মা’ রূপে তিনি ধরা দিলেন বাগুইআটি অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল ক্লাবের মণ্ডপে। না, কোনও কল্পনার সৃজন নয়। কঠোর বাস্তব এবং এক ব্যতিক্রমী সর্বজনীন মায়ের জীবনগাথা পরতে পরতে সাজানো হয়েছে মণ্ডপসজ্জায়। পাপিয়া রায়, নদিয়ার রানাঘাটের এক অজপাড়া গাঁয়ে সামান্য গৃহবধূ। কর্মগুণে আজ তিনি অসামান্যা, সর্বজনীন মা। পথে ফেলে দেওয়া অগণিত শিশু, বৃদ্ধ, বৃদ্ধার যিনি ত্রাতা। যাদের কাছে তিনি মা অন্নপূর্ণা।
আরও পড়ুন-শিশু পড়ুয়াদের পাশে
সভ্যসমাজ যাদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়, সেই ছোট ছোট শিশুদের জীবনপথের কান্ডারি তিনি। দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের পালনের জন্য দেবী দুর্গারকে আবাহন করেছিলেন দেবতারা। বাস্তবের পাপিয়াও যেন আজ এযুগের দুর্গা। স্নেহের পরশে আগলে রেখেছেন তাঁর সন্তানদের। তাই আজ তিনি ভাগাড়ের মা। তাঁর জীবনকাহিনি নিয়েই তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ মণ্ডপ। পাপিয়াদেবী যে স্টেশনে বসে তাঁর সন্তানদের দেখভাল করেন সেই স্টেশনটিই থাকছে মণ্ডপসজ্জায়। থাকছে তাঁর কাজের আরও কয়েকটি স্থান।
আরও পড়ুন-ডেঙ্গিতে মৃত্যু ৩, স্বাস্থ্য দফতর পদক্ষেপ নিল
শিল্পী সম্রাট ভট্টাচার্যের ভাবনায় মণ্ডপ জুড়ে থাকছে প্ল্যাটফর্ম, ট্রেন, ওভারব্রিজ, রেললাইন। থাকছে পাপিয়াদেবী ও তাঁর ভাগাড়ের সন্তানদের মডেল। স্টেশনের আদলেই তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই থাকছে কুণাল পাঠকের অভিনব আলোকসজ্জা। থাকছে অনিল কুমার মোদকের তৈরি কাঠের প্রতিমা। প্রতিমার থাকবে মৃন্ময়ী রূপ। বন্ধুমহল ক্লাবের ৪২তম বর্ষের এই ব্যতিক্রমী ভাবনার মূল কান্ডারি ক্লাবের সম্পাদক তথা রাজারহাট গোপালপুর বিধানসভা ক্ষেত্রের যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থ সরকার। তাঁর দাবি, সবমিলিয়ে তাঁদের এই মণ্ডপসজ্জা দর্শনার্থীদের মন ও নজর কাড়বে।