আগরতলা : ‘‘সিপিএম গত সাড়ে তিন বছর ঘরে ঢুকে ঘুমোচ্ছিল। এখন হঠাৎ তাদের দেখা যাচ্ছে। যে সিপিএম কর্মীরা বিজেপির হাতে মার খাচ্ছেন, আমরা তাঁদের সহমর্মী। কিন্তু ঘটনা হল, তৃণমূল ক্ষমতায় আসছে বুঝতে পেরে বিজেপি এখন বিরোধী ভোট ভাঙার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সিপিএমকে খবরে আনতে চাইছে। এসব করে কিছু হবে না। ওরা পারস্পরিক স্বার্থে ম্যাচ ফিক্সিং করছে। বাম জমানার সন্ত্রাস মানুষ ভোলেননি। সন্ত্রাস বনাম উন্নয়নের যুদ্ধে মানুষ তৃণমূলকে চান। সিপিএম, বিজেপির সাধারণ সমর্থকরাও ভোট দেবেন তৃণমূলকে।” শুক্রবার আগরতলায় এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন সুস্মিতা দেব। সুস্মিতা বলেন, তৃণমূল এবার এখানে এলাকাভিত্তিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিচার করে সংগঠন গড়ে তুলছে।
আরও পড়ুন : এজেন্সি নামিয়ে জননেত্রীকে আটকানো যায়নি, যাবে না
সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ মূলত তিনটি বিষয়ে বলেন।
১) বিজেপি যেভাবে অপছন্দের মিডিয়ার উপর হামলা শুরু করেছে, তার নিন্দা করেন।
২) হঠাৎ যে রহস্যজনকভাবে কিছু বিজেপি বনাম সিপিএম সংঘর্ষের খবর হল, তার কারণ ব্যাখ্যা করেন।
৩) কুণাল বলেন, দুটো তারিখ লিখে রাখুন। প্রথম হল, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ আগরতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পদযাত্রা করবেন। আর দ্বিতীয় হল ২০২৩ সালের ৪ থেকে ৯ মার্চের মধ্যে কোনও শুভদিনে ত্রিপুরায় তৃণমূল সরকার শপথগ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন : এজেন্সি নামিয়ে জননেত্রীকে আটকানো যায়নি, যাবে না
কুণাল বলেন, ত্রিপুরার অনেক সম্ভাবনা আছে। কিন্তু বামফ্রন্ট বা বিজেপি কেউ কাজ করেনি। বিজেপি আরও ক্ষতি করছে। আমরা বলছি সন্ত্রাস বনাম সন্ত্রাস নয়। সন্ত্রাস বনাম উন্নয়ন। বাংলার সবক’টি প্রকল্প এখানেও চালু হবে। ভিক্ষা নয় চাইছি ঋণ, তৃণমূলকে ভোট দিন।
আর এই ভোটের প্রশ্নেই তিনি বিজেপি বনাম সিপিএম চিত্রনাট্যের প্রসঙ্গ আনেন। তিনি বলেন, বাম নেতা বা কর্মীদের অসম্মান করার প্রশ্ন নেই। আপনারা আপনাদের ভাবাদর্শে চলুন। কিন্তু বিজেপিকে রুখতে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। তাই ভোট দিন তৃণমূলকে। ভোট নষ্ট করবেন না। বিজেপি চায় সিপিএমকে খবরে আনতে। কিন্তু সিপিএম সাময়িক দু’চারদিন প্রচার ছাড়া কোনও সুবিধে পাবে না। কারণ মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার পক্ষে মনস্থির করে ফেলেছেন। বিজেপি এটা বুঝেছে বলেই সন্ত্রাসের পাশাপাশি সিপিএমকে অক্সিজেন দেওয়ার খেলা খেলছে।
সাংবাদিক বৈঠকে ত্রিপুরার তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকও ছিলেন।
এদিন সুস্মিতা দেব উদয়পুরে আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের দেখতে যান। বিকেলে এসে পৌঁছেছেন সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। জয়া দত্ত, পারমিতা সেন, শক্তিপ্রতাপ সিংরা ত্রিপুরার ছাত্র-যুবদের সংগঠিত হতে বিপুল পরিশ্রম করছেন।
এদিকে বিজেপি-সিপিএম আঁতাঁত নিয়ে আরেকটি ঘটনা সামনে এসেছে। বিজেপির গুন্ডারা খবরের কাগজের অফিস ভাঙার পাশাপাশি সিপিএমের পার্টি অফিস এবং পার্টির কাগজের অফিসও ভেঙেছিল। বিস্ময়কর বিষয়, আক্রান্ত প্রতিবাদী কলমের তরফে পুলিশি অভিযোগে বিজেপির নেতাদের নাম থাকলেও সিপিএমের করা অভিযোগে বিজেপির হামলাকারী পরিচিত মুখেদের নাম নেই।