অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, গ্লাসগো: নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় তুলোর মতো মেঘ। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে চারপাশ। দেশের মাটি ছেড়ে সুদূর বিদেশেও আমরা পাই শরতের আভাস। স্কটল্যান্ডে মা দুর্গা আসেন আকাশে বাতাসে। নিজের বাড়ি, দেশের মাটি ছেড়ে ‘সাইবার রিস্ক কনসালট্যান্ট’ হিসাবে পেশার সূত্রে গ্লাসগোতে (Glasgow- Durga Puja) রয়েছি। আমার পরিবারও রয়েছে আমার সঙ্গে। তবুও পাড়ার পুজো, ছেলেবেলার বন্ধুদের জন্য মন খারাপ করে। তবে এখানে মা দুর্গা আমার সবথেকে আপনজন। নিজের হাতে আমি তাঁর আরাধনা করি। ২০০৯ থেকে গ্লাসগোয় (Glasgow- Durga Puja) এই দুর্গাপুজোর পৌরোহিত্য করছি আমি। অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় আরতির সময় মায়ের মুখ যেন জ্বলজ্বল করে ওঠে। যেমনটা দেখতাম ছোটবেলায়। বড়রা বলতেন, অষ্টমীর সন্ধ্যায় মা দুর্গা যেন জেগে ওঠেন। মা দুর্গার সেই রূপ কাছ থেকে অনুভব করেছি প্রবাসে, পৌরোহিত্যের দায়িত্ব পেয়ে। খুব নিষ্ঠা সহকারে এখানে পুজো হয়। উইকএন্ডে বা ছুটির দিনে নয়, একেবারে পঞ্জিকা মেনে হয় দেবীর বোধন থেকে বিসর্জন। তবে এখানে প্রতিমা বিসর্জন হয় না। ঘট বিসর্জন হয়। কারণ প্রতিমা আসেন কলকাতা থেকে জাহাজে করে। চার বছর পর আবার নতুন প্রতিমা আনা হয়। চারদিনই থাকে ভোগের আয়োজন। পোলাও, আলুর দম, খিচুড়ি পায়েস, ভাজা, পনির চাটনি দিয়েই মায়ের ভোগ নিবেদন করা হয়। আর এই ক’টা দিন আমরাও চেটেপুটে খায় নানারকম বাঙালি খাবার। এখানকার নাগরিকরাও একইভাবে আমাদের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন। ঢাকের তালে ধুনুচি নাচে সঙ্গ দেন। ১৯৮২ সাল থেকে গ্লাসগোর এই পুজো হচ্ছে। এবার ৪০তম বর্ষ। এবছর তাই আয়োজনও বিশেষ। প্রত্যেক সন্ধ্যাই রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঙ্গে সবাই মিলে প্রাণ খোলা আড্ডা। এভাবে কেটে যায় চার-পাঁচটা দিন।
আরও পড়ুন-আজ মহাষ্টমী