প্রতিবেদন : সকালবেলার আলোয় বাজে বিদায়ব্যথার ভৈরবী। অষ্টমীর বৃষ্টিভেজা রাতের শেষে নবমীর সকালে কোনও কোনও জায়গায় কিছুক্ষণের জন্য হলেও দেখা দিয়েছিল পেঁজা তুলোর মতো মেঘ-ভাসা শরতের নীল আকাশ। আনন্দে মন ভরে উঠলেও নেপথ্যে যেন বেজে উঠেছে উৎসবের বিদায়বার্তা। তাই এতটুকু সময় নষ্ট না করেই দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করেই নবমীর রাস্তায় জনস্রোত। পা মিলিয়েছেন কয়েকদিনের জন্য ঘরে ফেরা প্রবাসী-অনাবাসী বাঙালিও।
আরও পড়ুন-নবমীর স্লগ ওভারে জনজোয়ার দখল নিল জেলা জেলান্তরে লালগড় রাজবাড়িতে সর্বমঙ্গলাই দুর্গা
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গেই মঙ্গলবার শুরু হয়ে গিয়েছে নবমীর পুজো। বলি, হোমও সঙ্গে। বিকেলেই শেষ হয়েছে তিথি। শুরু হয়ে গিয়েছে দশমী। তবে দিন হিসেবে মায়ের যথার্থ বিদায়বেলা বুধবারই। পাহাড় থেকে সাগরের মিষ্টির দোকানে তাই জমে উঠেছে ভিড়। কুঁচো গজা, খাস্তা গজা, মিহিদানা, সীতাভোগ, চন্দ্রপুলির পশরায় সেজে উঠেছে দোকান। খাসির মাংস-ভাত খেয়ে নবমীর প্রতিমা-দর্শনের পাশাপাশি দশমীর মিলনোৎসবেরও প্রস্তুতি নিয়েছেন বাংলার মানুষ। প্রস্তুতি চলেছে কলকাতা-হাওড়ার গঙ্গায় বিভিন্ন বিসর্জন-ঘাটেও। পুবপাড়ে বাবুঘাট, বাজে কদমতলা, আহিরীটোলা, বাগবাজার এবং পশ্চিমে শিবপুর, বাঁশতলা, বাঁধাঘাটে মঙ্গলবার থেকেই তৎপর কলকাতা এবং হাওড়া পুরসভা।
আরও পড়ুন-মহাষ্টমীতে রেকর্ড ভিড় শিল্পশহরের মণ্ডপে
গঙ্গাদূষণ এড়িয়ে বিসর্জনপর্বের মহড়ায় ব্যস্ত পুরকর্মীরা এবং দুর্ঘটনা এড়াতে আগেই হাজির বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। গঙ্গায় শুরু হয়ে গিয়েছে জলপুলিশের লঞ্চের টহলদারি। গোটা রাজ্যেই বিজয়াপর্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর পুলিশ। নবমীর সারাদিনই কৌতূহলী ভিড় আদি দক্ষিণ কলিকাতা বারোয়ারি সমিতির পুজোয়। মাত্র আধ ইঞ্চির দুর্গাপ্রতিমার কথা শুনে অনেকেই ছুটে এসেছেন দূরদূরান্ত থেকে। ত্রিমাত্রিক এই মূর্তির সঙ্গে আছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং গণেশও। সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, এটিই বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দুর্গাপ্রতিমা। ভিড় জমেছে শ্রীরামপুরের দে পরিবারের ২১৭ বছরের পুজোতেও। এখানে মা দুর্গার সঙ্গে তাঁর সন্তানরা থাকেন না। রয়েছেন দুই সখী জয়া এবং বিজয়া। দেবীর বোধন হয় দোলে। তারপরে পুজো হয় ষষ্ঠী এবং সপ্তমীর। উত্তর কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়িতে পুষ্পাঞ্জলি দিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। ঘুরে দেখলেন রাজবাড়ি এবং কলকাতার অন্যান্য বেশ কিছু পুজোও। আড্ডা দিলেন চুটিয়ে। পুজোর আনন্দ উপভোগের জন্যই তাঁর কলকাতা সফর। কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশনে বালতি হাতে ভোগ পরিবেশন করলেন সাংসদ অপরূপা পোদ্দার।