প্রতিবেদন : ফের একবার বিদেশের মাটিতে দেশের মুখ পোড়াল নরেন্দ্র মোদি সরকার। জনপ্রিয় মার্কিন বাণিজ্যিক দৈনিক দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর (The Wall Street Journal) প্রথম পাতায় দেওয়া এক বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে ভারতে সরকারি এজেন্সিগুলিকে এমনভাবে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে আইনের শাসন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ফলে সে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নেই।
সেই সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে কমপক্ষে ১২ জন ভারতীয় পদাধিকারীর বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং তার মিত্র রাষ্ট্রগুলিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। সেই তালিকায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের নামও আছে। এছাড়া আছে ইডি, সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থার কয়েকজন পদাধিকারীর নাম। নাম রয়েছে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ও দুই বিচারপতির। ওই বিজ্ঞাপনে সীতারামন-সহ কয়েকজনের ছবিও ছাপা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বউবাজারে গৃহহীনদের পাশে রাজ্য
শনিবারের কাগজে (The Wall Street Journal) ওই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। যেদিন এই বিজ্ঞাপন প্রকাশ হয়েছে, ঘটনাচক্রে সে সময় মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা আমেরিকাতেই রয়েছেন। বিশ্বব্যাঙ্ক, আইএমএফের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে তিনি সে দেশে গিয়েছেন। দেশে বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের একাংশের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ করে আসছে। বিরোধীদের সেই অভিযোগকেই স্বীকৃতি দিল মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত ওই বিজ্ঞাপন। মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে দেওয়া এই বিজ্ঞাপনে মার্কিন সরকারকে তাদের গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি আইনের অধীনে অর্থনৈতিক ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে আর্জি জানানো হয়েছে। ২০১৬ সালে চালু হওয়া ওই আইনের মূল বিষয় হল, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের আমেরিকা ও তাদের মিত্র দেশগুলিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা। উল্লেখ্য, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে ২০০৫ সালে নরেন্দ্র মোদিকে আমেরিকা সফরে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছিল মার্কিন প্রশাসন। সেই নরেন্দ্র মোদির আমলে ভারতে আইন শাসনের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, নরেন্দ্র মোদি সরকারের আচরণের কারণেই আন্তর্জাতিক আঙিনায় দেশের মুখ পুড়ল। ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সিনিয়র উপদেষ্টা কাঞ্চন গুপ্তা একটি ট্যুইট বার্তায় বলেছেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা।