জব চার্নকের শহরে উত্তর থেকে দক্ষিণে অজস্র কালীবাড়ি রয়েছে। কোনও কালীবাড়ি সম্ভ্রান্ত জমিদারের হাত ধরে, কোনওটা আবার ফিরিঙ্গি সাহেবের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কোথাও স্বপ্নাদেশে, কোথাও ডাকাতের হাতে, কোথাও সাধকের সাধনা অথবা পারিবারিক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল এই কালীমন্দিরগুলো।
এই সব প্রসিদ্ধ প্রত্যেকটি মন্দির প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে নানারকম চমকপ্রদ কাহিনি।
সাধারণত জানি যে দীপান্বিতা অমাবস্যা অর্থাৎ কালীপুজোর দিনে কালীমন্দিরে মা পূজিতা হবেন কালী রূপে কিন্তু এমন কিছু মন্দির আছে যেখানে কালীপুজোর দিন মা কালীকে লক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয় অর্থাৎ শ্যামা লক্ষ্মী বা দীপান্বিতা লক্ষ্মী। কোথাও রাতে কালীপুজো হলেও সন্ধেবেলায় হয় ধান্যলক্ষ্মীপুজো।
আরও পড়ুন-শারদ সাহিত্যের আলোকিত অক্ষরমালা
কালিকা হলেন একজন হিন্দু দেবী। তাঁর অন্য নাম শ্যামা বা আদ্যাশক্তি। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অনুষ্ঠিত দীপান্বিতা কালীপুজো অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই পুজোর দিনটি ভারতবর্ষে নানা জায়গায় দীপাবলি উৎসব হিসেবে পালিত হয়।
ক্ষেমানন্দের ‘মনসার ভাষাণ’-এ লেখা রয়েছে—
‘‘কালীঘাট কালী বন্দ বড়াতে বেতাই’’
অর্থাৎ ষোড়শ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্য কালীঘাট বন্দনা বুঝিয়ে দেয় কালীঘাটের প্রাচীনত্ব।
দুর্গাদাস মুখোপাধ্যায় লিখিত অষ্টাদশ শতাব্দীর সৃষ্টি ‘গঙ্গাভক্তি তরঙ্গিণী’তে পাওয়া যায়—
‘‘চলিল দক্ষিণ দেশে, বালি ছাড়া অবশেষে
উপনীত যথা কালীঘাট,
দেখেন অপূর্ব স্থান
পূজা হোম বলিদান
দ্বিজগণে চণ্ডী করে পাঠ।”
অন্নদামঙ্গল কাব্যে ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
কালীঘাট প্রসঙ্গে লিখেছেন—
‘‘কালীঘাটে চারি আঙ্গুলি ডানি পার।
নকুলেশ ভৈরব কালিকা দেবী তার।”
আরও পড়ুন-বিজেপির ভাঁওতা মানুষ ধরে ফেলেছে
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিকে কার্তিকী অমাবস্যা বলে। এই বিশেষ তিথিতেই হয় শ্যামাপুজো। এছাড়া এই তিথিতেই দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজো হয়।
পুরাণে এই তিথির বিশেষ তাৎপর্য আছে। এই তিথিতেই সমুদ্রমন্থনের সময় শ্রী ও সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব। অলক্ষীকে বিদায় করে মহালক্ষ্মীকে বরণ করে ঘরে তোলা তাই এদিনেই। শাস্ত্রে আরও বলা আছে যে, দেবী লক্ষ্মী ভগবান নারায়ণের স্ত্রী। যে শক্তি দ্বারা বিষ্ণু বিশ্ব জগৎ সংসার পালন করেছেন সেই শক্তিই হলেন মা লক্ষ্মী। তাঁর অষ্টরূপের উল্লেখ রয়েছে। সেই আটটি রূপ হল আদিলক্ষ্মী, ধনলক্ষ্মী, ধান্যলক্ষ্মী গজলক্ষ্মী, সন্তান লক্ষ্মী এবং বিদ্যালক্ষ্মী। দীপাবলিতে যে লক্ষ্মী পুজো করা হয় তাকে দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজো বলে। বেশিরভাগ বাড়িতেই ধান্যলক্ষ্মীর আরাধনা হয়। শুধু বাড়িতে নয়, অনেক মন্দিরেও কালীপুজোর দিন লক্ষীপুজো করা হয়।
কালীঘাট মন্দির : একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র এই কালীঘাট মন্দির। পৌরাণিক কিংবদন্তি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি আঙুল) এই তীর্থে পড়ে। এই তীর্থের পীঠদেবী দক্ষিণাকালী এবং ভৈরব বা পীঠ রক্ষক দেবতা নকুলেশ্বর। অলৌকিক মাহাত্ম্য দেবী মায়ের। ত্রিনয়নীই মা এখানে জীবনদায়ী, ফলদায়ী। তাঁর কাছে গেলে তিনি ভক্তদের ফেরান না। মাকে আকুল হয়ে ডাকলে মনস্কামনা পূর্ণ করেন তিনি।
আরও পড়ুন-১০ দুষ্কৃতী মিলে গণধর্ষণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে
দীপান্বিতা অমাবস্যায় কালীঘাটের মহাকালীকে পুজো করা হয় লক্ষ্মীরূপে। কালী নয়। লক্ষ্মী মূর্তির মধ্যে প্রত্যক্ষ করার রীতি এই শক্তিপীঠে। সারারাত ধরে চলে মা লক্ষ্মীর আরাধনা।
নিত্যপূজার সঙ্গে ঘোর অমানিশার রাতে রাজবেশে অপরূপ সাজে আবির্ভূতা হন দেবী কালিকা।
কালীঘাট মন্দিরের কালীপুজো সন্ধ্যায় এই লক্ষ্মীপূজা করা হয়।
অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজোর দিন সূর্যাস্তের চব্বিশ মিনিটের মধ্যে আরম্ভ হয় লক্ষ্মীপুজো। তার আগে হয় অলক্ষ্মী বিতাড়ন। চালবাটা দিয়ে তৈরি তিন বা চার ইঞ্চি মাপের অলক্ষ্মী পুতুল তৈরি করে রাখা হয় মন্দিরের গর্ভগৃহের বাইরে। সেই অলক্ষ্মী পুতুলের সামনে পাটকাঠিতে আগুন লাগিয়ে সেবায়তরা তিনবার মন্দির প্রদক্ষিণ করেন। আর জোরে জোরে কুলো বাজিয়ে হয় অলক্ষ্মী বিদায়। তারপর শুরু হয় শ্যামা লক্ষ্মীপুজো।
মা লক্ষ্মীর পুজোর ভোগ নিরামিষ। আর সেই নিরামিষ ভোগ আসে সেবায়েতদের বাড়ি থেকেই। মায়ের যেহেতু আমিষ ভোগ থাকে সেগুলো একটু আলাদা করে রাখা হয়। ভোগ ছাড়াও শাড়ি দেন সেবায়তরা। সেগুলোও মাকেই পরানো হয়। ওইদিন শ্যামা মাকে লক্ষ্মীরূপে পূজা করা হয়। মা কালীর অঙ্গেই লক্ষ্মী বসনা! খুব ভোরে দেবীকে জাগিয়ে মঙ্গলারতি করা হয়। আবার দুপুরবেলা দেবীকে আরতি করে ভোগ নিবেদন হয়। ভোগ হিসেবে থাকে — বেগুন ভাজা, পটল ভাজা, কপি আলু ও কাঁচকলা ভাজা, ঘিয়ের পোলাও, ঘি ডাল, শুক্তো, শাক ভাজা, মাছের কালিয়া, পাঁঠার মাংস ও চালের পায়েস।
আরও পড়ুন-রেশনকার্ডে যিশুর ছবি, তীব্র উত্তেজনা ছড়াল কর্নাটকে
এরপর অসংখ্য পাট কাঠি জ্বেলে মন্দিরকে তিনবার প্রদক্ষিণ শুরু হয় মায়ের রাত্রিকালীন পুজো। রাতে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয়। তাতে থাকে— লুচি, বেগুন ভাজা, আলু ভাজা, জ্বাল দেওয়া দুধ, ছানার সন্দেশ আর রাজভোগ। কালীপুজোর রাতে মায়ের অঙ্গসজ্জায় চোখধাঁধানো রূপ। লাল বেনারসি শাড়িতে সিঁদুর পরিয়ে রাজবেশ ধারণ করা হয়। সোনার অলংকার আর ফুল সাজে সেজে ওঠেন মা। কষ্টিপাথরের এই মূর্তির জিভ, খাঁড়া, মুণ্ডমালা সব সোনার। প্রায় তিন-চার ঘণ্টা ধরে পুজো করেন পূজারি। ওই দিন শ্যামা মা, কমলে কামিনী রূপেই বিরাজ করেন। এই পুজো শ্যামালক্ষ্মী নামে খ্যাত।
আরও পড়ুন-১০ দুষ্কৃতী মিলে গণধর্ষণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে
কুঠিঘাটের সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির : মা সিদ্ধেশ্বরী তিনশো আশি বছর অতিক্রম করেছেন অর্থাৎ এই মন্দিরটি তিনশো আশি বছরের প্রাচীন। এই সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মন্দিরটি খুবই জাগ্রত। কুঠিঘাট গঙ্গার খুব কাছেই অবস্থিত এই মন্দিরটি। মায়ের দারুময়ী মূর্তি। কথিত আছে, বেলঘরিয়া নিমতা থেকে মা স্নান করতে আসতেন কুঠিঘাটের গঙ্গায়। তারপর বেলগাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতেন। আবার রওনা দিয়ে পৌঁছে যেতেন নিমতায়। তৎকালীন জমিদার জয়নারায়ণ বন্দোপাধ্যায়কে এক ঘোর অমাবস্যার রাতে মা স্বপ্নাদেশ দেন তাঁকে এখানে প্রতিষ্ঠা করার। নিমতা জঙ্গলে সুগন্ধি কর্পূর গাছের গুঁড়িতে মহাকাল নিয়ে তিনি অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে রটন্তী চতুর্দশীতে মাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্বপ্নদৃষ্ট এই দারুমূর্তি চতুর্ভুজা। দেবীর হাতে খড়্গ, মুণ্ড, অভয়, বরাভয়। দেবীকে সাজানো হয়েছে চার হাতে চারটি পদ্মফুল দিয়ে। দেবীর কানেও পদ্মফুল। এই কুঠিঘাট সিদ্ধেশ্বরী মায়ের কাছে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ প্রায়ই আসতেন। কেউ অসুস্থ হলে ঠাকুর এখানে এসে ডাব চিনি দিয়ে মানত করতেন।
কুঠিঘাটে অবস্থিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের আরও একটি বিশেষত্ব আছে। আমরা তো জানি যে শ্যামাপূজার দিন অর্থাৎ দীপান্বিতা অমাবস্যায় সবখানেই শ্যামাপূজা হয়। এই মন্দিরেও সিদ্ধেশ্বরী মাকে শ্যামা কালী হিসাবে সারারাত ধরে পুজো, প্রসাদ বিতরণ যা যা করা হয় সেগুলো তো হয়ই; পাশাপাশি এই দিনে দীপান্বিতা লক্ষ্মীপুজো করা হয়। ধান্যলক্ষ্মীর পুজো সেটা।
আরও পড়ুন-সম্প্রীতির পুজো চরণপাহাড়িতে
শ্যামাপুজোর দিন লক্ষ্মীপুজো নিয়ে কথা হল সেবায়েত দেবকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি জানালেন, কার্তিক অমাবস্যায় এই মন্দিরের সিদ্ধেশ্বরী মায়ের পুজো শুরুর আগে রীতি মেনে অলক্ষ্মী বিদায় করে ধান্যলক্ষ্মীর পুজো করা হয়। প্রথমে মা লক্ষ্মীকে সুন্দর করে নতুন কাপড় পরিয়ে সাজানো হয়। আর বসানো হয় হাঁড়িতে ধান দিয়ে। তাই তিনি ধান্যলক্ষ্মী। ধান ভর্তি আড়ি বা হাঁড়ির উপরে মাকে বসানো হয়। ফুলের মালা এবং অন্যান্য অলঙ্কারে সাজানো হয়। সুন্দর করে আলপনা এঁকে একটি ছোট কাঠের চৌকির ওপর আড়ি বসানো হয়। জ্বালানো হয় প্রদীপ। সাজানো হয় পুজোর সব উপকরণ। ষোড়শোপচারে মায়ের পুজো হয়। এরপর সিদ্ধেশ্বরী মায়ের পুজো হয়।
সিদ্ধেশ্বরী মায়ের ভোগে যেমন বারো থেকে চোদ্দোরকম পদ থাকে ঠিক সেরকম ধান্যলক্ষ্মীকেও তাই দেওয়া হয়। বারো থেকে চোদ্দোরকম পদ ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়। রুপোর পেঁচা, রুপোর মুকুট, রুপোর গাছকৌটো, রুপোর সিঁদুর কৌটো, রুপোর কুনকেতে ধান ভরে এবং রুপোর অলংকারের অপরূপ সাজে সেদিন মা লক্ষ্মীকে সাজানো হয়।
আরও পড়ুন-ক্ষমতা ধরে রাখতে গোপন পরিকল্পনা মোদি সরকারের
নেতাজি কলোনি কালীমন্দির : বরানগরের পূর্ব প্রান্তে নেতাজি কলোনি কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল উনিশশো ঊনপঞ্চাশ সালে। ওপার বাংলা থেকে আগত ছিন্নমূল মানুষজনের উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয় এই মা কালীর মন্দির। অত্যন্ত জাগ্রত এই মা। সারাবছর ভক্ত সমাগম লেগেই থাকে। জনশ্রুতি, এই মায়ের কাছে আকুল প্রার্থনায় ফল মেলে।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় ধুমধাম সহকারে এখানে পুজোপাঠ অনুষ্ঠিত হয়। মা কালীর পীতাসন রয়েছে। কালীপুজোর দিন মাকে সোনার গয়নায় সাজানো হয়। মায়ের অপরূপ রূপ দেখার জন্য ভক্তকুল মুখিয়ে থাকে। কালীপুজোর দিনে এখানে মহালক্ষ্মীর পুজোর রীতি রয়েছে।
মন্দিরের সেবায়েতের কথায়, এখানে যেহেতু শ্যামা মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা, চক্ষুদান সবকিছুই করা আছে তাই কার্তিক অমাবস্যার দিনে শ্যামা মাকেই মহালক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয়। দেবী কালিকাকে যেমন খিচুড়ি, পাঁচ ভাজা, লাবড়া তরকারি, পরমান্ন দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয় ঠিক তেমনই মহালক্ষ্মীকেও সেইভাবেই ভোগ নিবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন-মেসি-এমবাপে জেতালেন পিএসজিকে
মহালক্ষ্মী এখানে চতুর্ভুজা। দীপান্বিতায় মাকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে, ষোড়শোপচারে এবং মহাসমারোহে পুজোপাঠ হয়। ১০৮টা প্রদীপ জ্বালানো হয়। দেবী কালিকাই সেদিন মহালক্ষ্মী হয়ে যান। মধ্যরাত থেকে পুজো শুরু হয়, সূর্যোদয়ের আগে পুজো শেষ হয়।
পরেরদিন চলে বস্ত্র বিতরণ এবং ভোগ বিতরণের পালা। মানুষের ঢল নামে।
বারোমেসে বামা কালী : পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের কাছে পাণ্ডু গ্রামে এই মন্দিরটি অবস্থিত। এটি হচ্ছে সাড়ে তিনশো বছরের পুজো। কালীপুজোর দিন মহাসমারোহে পুজো হয়। কালীপুজোর দিন মহাসমারোহে মন্দিরে ডাকাত কালীর পুজো হয়। আর দীপান্বিতা অমাবস্যার মধ্যরাতে এই মন্দিরে লক্ষ্মীপুজো করা হয়। এখানে মা লক্ষ্মী গৃহলক্ষ্মী হিসেবে পূজিতা হন। বৈশিষ্ট্য হচ্ছে লক্ষ্মী মাকে ধানের উপর সাজানো হয়। এক ফুট উচ্চতার মাটির লক্ষ্মী প্রতিমা তৈরি হয়। ধানের ওপর লক্ষ্মী মাকে বসিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে ভোগ নিবেদন করে পুজো সম্পন্ন হয়।
ভোগে তালের আকুর দেওয়া হয়। এছাড়াও থাকে পায়েস, কদমা চিঁড়ে।
আরও পড়ুন-ঐতিহ্যবাহী বয়রা কালীবাড়ি
কখনও দশভুজা, কখনও আদ্যাশক্তি মহামায়া, কখনও অষ্টভুজা, কখনও চতুর্ভুজা শ্যামা কালী, কত না রূপ তাঁর! কতই না আয়োজন!
কোন মন্দিরে হয় ওই বিশেষ দিনে হয় কুমারী পুজোও আবার কোথাও অন্নকূট।
পঞ্চানন তর্করত্ন লিখেছিলেন —
‘‘তোমারি করুণামৃতে ভূবন জীবন ধরে”…
অসাধারণ চরণ! অসামান্য তার মহিমা। দীপান্বিতা কালীপুজোয় করুণাময়ী কালীমন্দিরে মা (টালিগঞ্জের) রাজ রাজেন্দ্রাণী সাজে সেজে ওঠেন। করুণাময়ী মায়ের মন্দিরে কুমারী পুজো হয়। কালীপুজোর পরদিনে হয় অন্নকূট উৎসব।
সিদ্ধেশ্বরী ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি (বউবাজার) মন্দিরেও হয় অন্নকূট মহোৎসব।
পুঁটেকালী, কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট কলকাতাস্থ এই মন্দির। অত্যন্ত জাগ্রতা এই মা।
এই মন্দিরের কালীপুজো উপলক্ষে কুমারী পুজো ও অন্নকূট উৎসবও হয়।
দীপাবলির রাতে বা তিথিতে লক্ষ্মীপুজো পালনের রীতি বহু প্রাচীন। বহু পরিবারে, মন্দিরে এই দিনে লক্ষ্মীপুজো হয়। ভারতের সর্বত্রই দীপাবলির সন্ধ্যায় লক্ষ্মী আরাধনা হয়। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পশ্চিম ও মধ্য বঙ্গে। তাই এটি ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়।