প্রতিবেদন : এ যেন হুবহু পশ্চিমবঙ্গের প্রতিলিপি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অঙ্গুলিহেলনে কয়েক মাস আগেও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় নানাভাবে রাজ্য সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করতেন। যদিও কখনওই তাঁর চেষ্টা সফল হয়নি। আর সেসময় বাংলার বাম নেতাদের দেখা যেত রাজ্যপাল ও বিজেপির সুরে কথা বলতে। কিন্তু এবার খোদ বামশাসিত রাজ্য কেরলে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির ধামাধরা রাজ্যপাল (Kerala Governor Arif Mohammad Khan) নির্বাচিত সরকারকে একই কায়দায় অপদস্থ করতে নেমেছেন।
গত সপ্তাহে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান রাজ্যের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ নিয়ে কেরল হাইকোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পর বেশ কিছুটা ব্যাকগিয়ার দেন তিনি। উপাচার্যদের বিরুদ্ধে জারি করেন কারণ দর্শানোর নোটিশ। মোদি সরকারকে খুশি করতে গিয়ে উপাচার্য বিতর্কে মুখ পুড়িয়ে এবার রাজ্যপাল অন্য এক ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করতে নেমেছেন।
আরও পড়ুন-কর্নাটকে ফিরছে মাস্ক ও দূরত্ব বিধি, জারি হল বিজ্ঞপ্তি
এবার কেরলের অর্থমন্ত্রী কে এন বালাগোপালকে বরখাস্তের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখলেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান (Kerala Governor Arif Mohammad Khan)।
চিঠিতে রাজ্যপালের অভিযোগ, সম্প্রতি উপাচার্য বিতর্কে কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিরুবনন্তপুরম বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক সভায় অর্থমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেছেন জানিয়ে রাজ্যপালের যুক্তি, এই মন্তব্য দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতায় আঘাত করেছে। তাই তাঁকে অবিলম্বে অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। রাজ্যপাল তাঁর চিঠিতে বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর ওই মন্তব্য কেরলের সঙ্গে ভারতের অন্য রাজ্যগুলির মধ্যে একটা ভেদাভেদ তৈরি করছে। তাই এই ধরনের দেশবিরোধী মন্তব্য করা ব্যক্তিকে মন্ত্রিসভায় রাখা উচিত নয়। কেরলের রাজ্যপালের অভিযোগ, বামশাসিত এই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী তাঁকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন সেটা দেশবিরোধী। তাই তার প্রতিবাদ জানানো কর্তব্য বলেই তিনি মনে করেন। উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী বালাগোপাল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক সভায় বলেছিলেন, যাঁরা উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে এসেছেন, আমার মনে হয়, তাঁদের পক্ষে কেরলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিস্থিতি বোঝা খুবই কঠিন। এই মন্তব্যই আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা আরিফের কাছে দেশবিরোধী মনে হয়েছে।