নয়াদিল্লি : রাজস্থানে (Rajasthan- Congress) ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিবাদ আর শেষ হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের অনুগত বিধায়কদের আক্রমণ করে সচিন পাইলট তাঁদের শাস্তি দাবি করেছেন। পাইলটের দাবি, নতুন কংগ্রেস সভাপতির উচিত রাজস্থানের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের শাস্তি দেওয়া। পাশাপাশি গেহলট বিরোধী পাইলটের মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে যখন মুখ্যমন্ত্রী গেহলট প্রশংসা করলেন তখন তা দেখে আমার খুব মজা লাগল। প্রধানমন্ত্রীও একইভাবে সংসদে গুলাম নবি আজাদের প্রশংসা করেছিলেন। আমরা দেখেছি এর পর কী হয়েছে। এই আকর্ষণীয় ঘটনাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। উল্লেখ্য, সোমবার রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরস্পরের প্রশংসা করেন। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পাইলট কটাক্ষে বিঁধেছেন তাঁরই দলের মুখ্যমন্ত্রী গেহলটকে। রাজস্থানে এই দুই কংগ্রেস নেতার বিরোধ নতুন নয়। কিন্তু কংগ্রেসের নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের কাছে যেভাবে প্রকাশ্যে দাবি জানিয়ে চাপ তৈরি করলেন সচিন পাইলট তাতে ভোটের আগে অস্বস্তি বাড়ছে কংগ্রেসে।
বুধবার পাইলট বলেন, কংগ্রেস বহু পুরনো একটি দল। এখানে সবার জন্য একই নিয়ম, তা তিনি যত সিনিয়রই হোন না কেন। আমি নিশ্চিত নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে রাজস্থানের বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক ও মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
আরও পড়ুন-২৪-এর ভোট: চেন্নাইয়ে দুই মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘ বৈঠক
এদিকে রাজস্থানে (Rajasthan- Congress) আগামী ১৩ মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন। দলের পর্যবেক্ষক কেসি ভেনুগোপাল আগেই বলেছিলেন, রাজস্থানের পরিস্থিতি সম্পর্কে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর জয়পুরে মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়ালের বাসভবনে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বিধায়কদের সমান্তরাল বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের অনুগত নেতাদের দলের তরফে নোটিশ জারি করা হয়েছিল। পর্যবেক্ষক হিসাবে আসা অজয় মাকেন এবং মল্লিকার্জুন খাড়্গের রিপোর্টের পরে নোটিশগুলি জারি করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট যখন কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন তখন তাঁর উত্তরসূরি বেছে নিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের একটি বৈঠক ডাকা হয়। গেহলটের অনুগত বিধায়করা চেয়েছিলেন, যদি গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরতে হয় তবে ২০২০ সালের জুলাইয়ে সঙ্কটের সময় গেহলট সরকারের সমর্থক ১০২ জন বিধায়কের মধ্যে যে কোনও একজনকে মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত। দলের ভিতরে এভাবে গোষ্ঠীকোন্দলে মদত দেওয়ায় তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর কাছেও ক্ষমা চেয়েছিলেন গেহলট। এমনকি সভাপতি নির্বাচন থেকেও তিনি ছিটকে যান। এদিকে যে পাইলট খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব তিনিও ২০২০ সালের জুলাই মাসে ১৮ জন সমর্থক বিধায়ক-সহ, অশোক গেহলটের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। বিজেপি বিরোধিতার বদলে নিজেদের মধ্যে কোন্দলে লিপ্ত রাজস্থানের কংগ্রেস নেতাদের কার্যকলাপ ঘিরে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে হাইকমান্ডের।