শান্তনু বেরা, পেটুয়াঘাট: পূর্ব মেদিনীপুরের দেশপ্রাণ ব্লকের পেটুয়া মৎস্যবন্দরকে আরও লাভজনকভাবে গড়ে তুলতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। বঙ্গোপসাগরের উপকণ্ঠে রসুলপুর নদীর মোহনায় অবস্থিত এই মৎস্য বন্দরটি এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্যবন্দর। এই মুহূর্তে এই বন্দরটি রাজ্যের সবচেয়ে গভীর মৎস্যবন্দরও বটে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ মৎস্যবন্দরের কার্যকলাপে সার্বিক গতি আনতে রাজ্য সরকার বিশেষ নজর দিচ্ছে।
আরও পড়ুন-আজ ফিরহাদের সভা ঘিরে প্রস্তুত জঙ্গিপুর
২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর এই বন্দরের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণ। বাম আমলে মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দ তড়িঘড়ি করে এই বন্দরের উদ্বোধন করলেও বেশ কিছু পরিকাঠামো গত অভাবের জন্য বন্দরটি সেভাবে জমছিল না। সমুদ্র থেকে মাছ ধরে ট্রলারগুলো এই বন্দরে ভিড়লেও সড়কপথে লরিতে করে মাছ পরিবহণ করে নিয়ে গিয়ে দিঘা মোহনায় বিক্রি করতেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য মৎস্য দফতরকে দিয়ে এই বন্দরের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেন। এখানে উন্নত মানের তিনটি জেটি সহ সামুদ্রিক মাছের জন্য কোল্ড স্টোরেজ, বরফকল, পেট্রোল পাম্প প্রভৃতি গড়ে ওঠে। অতি সম্প্রতি ২০০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন কোল্ড স্টোরেজের ক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে। অনলাইনে এই পরিষেবার উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-দুয়ারে সরকার শিবিরে হামলা
এছাড়াও আরও একটি বরফকল তৈরি হচ্ছে। তবে আমফান ঝড়ে এই মৎস্যবন্দরের মৎস্য নিলাম কেন্দ্রটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সামুদ্রিক মাছের নিলাম ও বিক্রয় কেন্দ্র। এই বন্দরের স্পেশ্যাল অফিসার অরিন্দম সেনগুপ্ত জানান, “কয়েকদিনের মধ্যেই মৎস্য যোজনার পরিদর্শনের পর এই মৎস্য নিলাম কেন্দ্রটি ফের স্বমহিমায় ফিরে আসবে বলে আশা করছি।” দিঘা মোহনায় কোনও মৎস্য জেটি নেই। শংকরপুরে মৎস্য জেটি থাকলেও সেখানে নাব্যতা অনেক কম। ফলে মাছ ধরা ট্রলারগুলো সমুদ্রে যাতায়াতের সময় অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। চড়ায় লেগে মাছ ধরা ট্রলার উল্টে যাওয়ার ঘটনা প্রায় প্রতি বছরই ঘটে।
আরও পড়ুন-স্টলদুর্নীতি মামলায় পুলিশি হেফাজতে অধিকারী-ঘনিষ্ঠ
তাছাড়া ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা তো একপ্রকার রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইসব সমস্যা এড়ানোর জন্য অনেক মাছ ধরা ট্রলার এখন পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দর থেকে সমুদ্রে যাতায়াত করে। তবে পেটুয়াঘাট থেকে দিঘা মোহনা পর্যন্ত সড়কপথে মৎস্যজীবীদের মাছ বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম বেশি হচ্ছে। তাই পেটুয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ মৎস্যবন্দরকে দ্রুত আরও সক্রিয় করতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার।