প্রতিবেদন : দলের সর্বস্তরের নেতাদের নিয়ে এদিন এক ঐক্যবদ্ধ তৃণমূলের (Haldia- TMC) চেহারা দেখল পূর্ব মেদিনীপুর। প্রথমে চণ্ডীপুর চৌখালি বাজার, তারপর সুতাহাটা বাজার, দুটি সভাতেই ধরা পড়ল ঐক্যবদ্ধ তৃণমূলের ছবিটা। দুটি সভাতেই ছিল জনজোয়ার। ভিড়ে ঠাসা জনতাকে উদ্দেশ্য করে এদিন সদ্য জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তুলোধোনা করেন। বলেন, নন্দীগ্রামে বিজেপিতে ধস নেমেছে। তাতে ভয় পেয়ে গিয়েছে শুভেন্দুরা। তাই এখন বাড়ি বাড়ি যেও না যেও না বলতে হচ্ছে। ‘এ ডর হামে আচ্ছা লাগা’ বলেও এদিন কটাক্ষ করেন কুণাল। ক’দিন আগে এক কাউন্সিলরকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তা নিয়ে শুভেন্দু প্রতিবাদ জানান। এদিন ধৃত কাউন্সিলরের সমস্ত কুকীর্তি ফাঁস করে দেন তৃণমূল নেতারা। দলীয় নেতৃত্বের প্রায় প্রত্যেকেই এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলি তুলে ধরে তীব্র সমালোচনা করেন। কুণাল বলেন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকস্বার্থে আইএনটিটিইউসি লড়াই করছে। বাম জমানায় এই শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক বিরোধী কাজ চলছিল, তা দূর করে শ্রমিকস্বার্থে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন। এদিন সুতাহাটা বাজারের সভায় কিছু বিজেপি কর্মীর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময় স্থানীয় কিছু তৃণমূল কর্মী আপত্তি জানান। সভা চলাকালীন তাতে হস্তক্ষেপ করেন কুণাল। মঞ্চ থেকে তিনি জানিয়ে দেন, যাঁরা তৃণমূলে আসতে চেয়েছিলেন তাঁরা আগে শুভেন্দুর সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু পরে তাঁরা বিজেপিতে যাননি। তাঁদের নিয়ে কিছু কর্মী আপত্তি তোলেন। কুণালের নির্দেশে এদিনের মতো যোগদান স্থগিত রাখা হয়। পরে জানান, কর্মীদের যেখানে আপত্তি রয়েছে তখন ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে গোটা বিষয়টি উচ্চতর নেতৃত্বকে জানানো হবে। তারপর তাঁদের নির্দেশ মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। ততদিন পর্যন্ত যোগদান বন্ধ থাকবে। সভার পর সন্ধ্যায় বৈঠকে অবশ্য সমস্যার সমাধান হয়।
আরও পড়ুন-ফাঁস হল বিজেপির বাংলাভাগের গোপন চক্রান্ত
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন তৃণমূল (Haldia- TMC) নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় এদিনের সভায়। কুণাল বলেন, নতুন তৃণমূল হল ২০১১-এর আগের তৃণমূল। অর্থাৎ মেদহীন তৃণমূল। ক্ষমতায় আসার পর গত কয়েক বছরে অনেক ভাল কাজ হয়েছে। সংগঠন বড় হয়েছে। সেই সঙ্গে দলে কিছু মেদও জমেছে। সেই মেদ ঝরিয়ে পুরনো জায়গায় আবার ফেরানো হবে দলকে। সেটাই নতুন তৃণমূল। এই তৃণমূলে পুরনোরাও থাকবে, আবার নতুনরাও স্বাগত। এভাবেই এগিয়ে যাবে দল। এদিনের সভায় কুণাল ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, তমলুক সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র, জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি শিবনাথ সরকার, অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তন্ময় ঘোষ, জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস, প্রাক্তন মন্ত্রী ও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর, চণ্ডীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য, স্বপন নস্কর-সহ অন্য নেতারা।