প্রতিবেদন : হবু শিক্ষকদের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছেন সিপিএম নেতা ও আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য (Bikash Bhattacharya)। বিস্ফোরক এই অভিযোগ করেছেন ২০০৯ সাল অর্থাৎ বাম সরকারের আমলের প্রাথমিক শিক্ষক চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, বিকাশ ভট্টাচার্যরা অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে যতটা আগ্রহী তাঁদের ক্ষেত্রে ততটা নন। তার কারণ, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বাম সরকার ২০০৯ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই হবু প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে পারেনি। তাই সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের মতো লোকেদের এই শিক্ষকদের নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। এঁরা ধর্মতলায় ধরনা দিলেও এঁদের মঞ্চে বিকাশবাবুদের দেখা যায়নি। সোমবার বিকেলে এই হবু শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সমস্যার কথা খুলে বলেন। সবটা শোনার পর কুণাল চাকরিপ্রার্থীদের জানিয়েছেন, আইনি ও অন্যান্য জটিলতা রয়েছে। আদালতের রায় পেয়ে গেলে সব জটিলতা কাটিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। তবে তার আগে কুণাল ফোনে কথা বলেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের সঙ্গে। তিনিও জানিয়েছেন, আইনি জটিলতা কেটে গেলে এই শিক্ষকদের নিয়োগ হতে দেরি হবে না। তবে বিকাশ ভট্টাচার্যদের দ্বিচারিতায় সরব চাকরিপ্রার্থীরা।
এদিন দেবাশিস বিশ্বাস সহ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কথা বলেন কুণাল ঘোষের সঙ্গে। সবটা শোনার পর দেখা যায় এ বিষয়ে পর্ষদ সভাপতি ও সরকারি আইনজীবীর একটি মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। বৈঠক থেকেই কুণাল ফোনে ধরেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে। সবটা শোনার পর পর্ষদ সভাপতি হবু শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে বলেন, একটি আইনি জটিলতা রয়েছে। আদালত রায় দিলেই তিনি অন্যান্য জটিলতা কাটিয়ে প্রয়োজনে এক মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করবেন।
আরও পড়ুন-আজ তিনদিনের সফরে নদিয়া যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী
হবু শিক্ষক প্রতিনিধি দলের সদস্য দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, আমরা গত ১৩ বছর ধরে ঘুরছি। ২০০৯ সালেই আমাদের নিয়োগ হওয়ার কথা। কিন্তু বাম সরকার সেই নিয়োগ আমাদের দেয়নি। এখন আমরা দেখছি বিকাশ ভট্টাচার্যরা অন্য ধরনা মঞ্চে গিয়ে ক্যামেরার সামনে অনেক কথা বলছেন। তাঁর জুনিয়র আইনজীবী সুদীপ্ত বিক্রম আদালতে দাঁড়িয়ে ভূরি ভূরি মিথ্যা কথা বলেন। আবার ক্যামেরার সামনে অন্য কথা বলেন। অথচ বাম আমলের অনিয়মের বিষয় বলে বিকাশ ভট্টাচার্যরা (Bikash Bhattacharya) আমাদের দিকে কার্যত ফিরেও তাকান না। কিন্তু এই দ্বিচারিতা কেন? আজ কুণাল স্যারের সঙ্গে কথা বলে আশ্বাস পেলাম যে জটিলতা কাটিয়ে নিয়োগ হবে। সব মিটে গেলে আমরা দিদিকে একবার প্রণাম করতে চাই।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, বিকাশ ভট্টাচার্যরা এক-এক জায়গায় এক-একরকম বলছেন ফলে জটিলতা বাড়ছে। তাঁর সংযোজন, ২০০৯ সালের ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ওরা চাকরি পায়নি। এখন কোনও একটি মহল জোর করে ওঁদের নিয়োগ আটকে রাখতে চাইছে। অন্য ক্ষেত্রে বিকাশ ভট্টাচার্যদের যত আগ্রহ দেখা যায়, ২০০৯-এর বাম জমানার কেস বলে এঁদের প্রতি তত আগ্রহী নেই। আমি পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের সঙ্গে কথা বলেছি, সেই কথোপকথন ওরাও শুনেছে। পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, আইনি জটিলতা কাটিয়ে আদালতের রায় পেলে তিনি এক মাসের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে দেবেন। আজকের আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। আশা করছি তাড়াতাড়ি জট খুলবে।