অসীম চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও বেআইনিভাবে পদোন্নতি হওয়া ১২০০ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরকে এখনও স্বপদে বহাল রেখেছে কেন্দ্রের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। দেশের ৩১টি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (এনআইটি)। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট প্রমোশন বা পদোন্নতি খারিজের নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দেশের সবকটি এনআইটি-র জন্য এককালীন একটি সুযোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন-বিরোধী নেতার কুরুচিকর মন্তব্য, প্রতিবাদের ঝড় উঠুক
২০১৭-র ৬ অক্টোবর দেশের ৩১টি এনআইটি ও হাওড়ার শিবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি)-র নির্দেশকদের কাছে পাঠানো নির্দেশে বলা হয়, যাঁরা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে ন্যূনতম ছ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং সঙ্গে পিএইচডি রয়েছে, তাঁরা অ্যাসোসিয়েট পদে পদোন্নতি পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের মূল বেতন মাসে বাড়বে ৮০০০ টাকা করে। যাঁদের ৯ বছরের অভিজ্ঞতা তাঁদের ৯৫০০ টাকা বাড়বে। সেই এককালীন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সকলকেই এক ধাক্কায় সাড়ে নয় থেকে দশ হাজার টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন-শীতের শিহরন
দুর্গাপুরের এনআইটি-তেও এই অভিযোগ কম পক্ষে ১৫ জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের বিরুদ্ধে। এর বিরুদ্ধে প্রথমে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে মামলা হয়। সেখানকার কুরুক্ষেত্র এনআইটি-তে বেআইনি প্রমোশন দেওয়া হয়েছিল। ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রবিশঙ্কর ঝা ওই প্রমোশন বাতিল করার নির্দেশ দেন। সেই রায় সুপ্রিম কোর্টেও বজায় থাকে। ১২০০ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরকে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু আজও মোদি সরকার সেই রায়কে গুরুত্ব দেয়নি। সকলেই স্বপদে রয়ে গিয়েছেন। প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে যেখানে হাইকোর্টের নির্দেশে অনেকেরই চাকরি গেল, বেতন বাবদ প্রাপ্ত টাকাও ফেরত দিতে হল, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা মন্ত্রকে এতবড় অনিয়ম নিয়ে কোথাও কোনও উচ্চবাচ্য নেই!