প্রতিবেদন : সরকারি অফিসাররা আপনার বাড়িতে আসছেন তো? কৃষক মাণ্ডিতে ধান বিক্রি করতে পারছেন? লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে নাম লিখিয়েছেন? স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার সু্যোগ ঠিকমতো পাচ্ছেন তো? মেয়ে কন্যাশ্রীর টাকা পেয়েছে? আদিবাসীদের মাঝে দাঁড়িয়ে অনেককেই কাছে ডেকে নিয়ে এমন প্রশ্ন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানতে চাইলেন কেমন আছেন তাঁরা। প্রকৃত অর্থেই মঙ্গলবার আদিবাসী সমাজের একেবারে অন্দরমহলে ঢুকে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে এক জনসভায় ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেরার পথে বেশ কয়েকবার কনভয় থামিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলেন তিনি।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতের আগেই কাজ শেষ করুন
আদিবাসী গ্রামে ঠিক যেন ঘরের মেয়ে। এদিন আগেই আদিবাসী নৃত্যে পা মিলিয়েছেন তিনি। নেচেছেন ধামসা-মাদলের তালে, ছন্দে। পরে আদিবাসীদেরই গ্রামে ঢুকে মাটির ঘরের দাওয়ায় বসে পড়লেন। কোলে তুলে আদর করলেন আদিবাসী শিশুকে। পরে ফেরার পথে ঢুকে পড়লেন বাজারে। কথা বললেন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। পরামর্শ দিলেন। দোকানে ঢুকে নিজে হাতে ভেজে স্থানীয়দের মধ্যে বিতরণ করলেন গরম চপ। মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি তেলেভাজা মুখে দিয়ে আপ্লুত গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন-পাঁশকুড়ার সমবায়েও মুখ পুড়ল বিরোধীদের
বেলপাহাড়িতে সভা সেরে ঝাড়গ্রাম ফেরার পথে এদিন বারবার কনভয় থামিয়ে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে যে গ্রামটিতে ঢুকলেন তার নাম কুরচিবনি। গেলেন আদিবাসী পরিবারের কাছে। ঘরের মেয়ের স্বাচ্ছন্দ্যে ঢুকে পড়লেন আদিবাসী কুটিরে। প্রথমে খোঁজখবর নিলেন আদিবাসী সমাজের। বসে পড়লেন দাওয়ায়। ছোট্ট শিশুকে পরম স্নেহভরে তুলে নিলেন কোলে। স্মৃতির পথ ধরে ফিরে গেলেন শৈশবে। বললেন, আমার মা-বাবা থাকতেন মাটির বাড়িতে। আমার জন্মও মাটির বাড়িতে। আমি জানি, মাটির বাড়ি কেমন হয়। জানতে চাইলেন, কী রান্না হচ্ছে? খুঁটিয়ে জানতে চাইলেন গ্রামের উন্নয়নের প্রকৃত ছবি। প্রশ্ন করলেন, আপনারা কৃষক মাণ্ডিতে ধান বিক্রি করতে পারেন তো? দুয়ারে সরকার ক্যাম্প চলছে। সরকারি আধিকারিকরা আপনাদের কাছে আসেন তো? চিকিৎসা ব্যবস্থা কেমন? বাংলার বাড়ির সুযোগ সকলে পাচ্ছেন কি না সে বিষয়েও জানতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন শুনে অনেক দূর থেকে ছুটে আসেন দলে দলে মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে, তাঁর কথা শুনতে। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় থেমে যায় শিলদা বাজারে। কথা বলেন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে।
আরও পড়ুন-শুভেন্দুকে দুরমুশ করে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
বেলপাহাড়ির প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধির ছবি তুলে ধরে স্থানীয় রাস্তাঘাটের অবস্থাও জানতে চাইলেন। এরপরে জননেত্রী পা রাখেন মালাবতীর জঙ্গলের পাশের একটি গ্রামে। জলের সমস্যার কথা শুনে তা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। ২০২৪-এর মধ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে পরিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে রাজ্য যে অঙ্গীকারবদ্ধ তা জানিয়ে দেন তিনি। জেলার মন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে আরও পুকুর খননের উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।