প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা না মেলায় রাজ্যের তিন জেলায় গঙ্গাভাঙন ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। মঙ্গলবার বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক জানান, গঙ্গার ভাঙনের ফলে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ সহ ফরাক্কা ব্যারেজ সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং নদিয়ার গঙ্গাতীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ভাঙনের জেরে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় দিন গুনছেন।
আরও পড়ুন-আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চমক সৌদির, কাজে এল না লিওর গোল
এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলতি বছর দু’বার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় সাংসদ কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সেখানকার ভাঙন মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের খরচ জানতে চেয়ে কেন্দ্রের কাছ থেকে পাল্টা চিঠি পাঠানো হয়েছে। সম্ভাব্য খরচের হিসেব করে তা কেন্দ্রকে পাঠানো হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই সামশেরগঞ্জ এলাকায় নদীভাঙন প্রতিরোধে রাজ্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলে পার্থবাবু জানান। প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। নদীভাঙন রোধে মোট ১৩টি প্রকল্পের কাজ চলছে, আরও চারটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-আমতায় ভাঙন রুখতে ১৫ কোটি
গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন সমস্যার মোকাবিলায় দলমত নির্বিশেষে সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের একজোট হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দরবার করার জন্য সেচমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন। অন্যদিকে আমতার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুকান্ত পাল রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর ভাঙন রোধে সরকারের পদক্ষেপের কথা জানতে চাইলে সেচমন্ত্রী বলেন, রূপনারায়ণ ও নিম্ন দামোদর অববাহিকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিনটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি সার্বিক পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সমীক্ষার কাজ চলছে। বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থ সহায়তায় এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে।
আরও পড়ুন-বিরোধী দলনেতার মিথ্যাচারের জবাব, আইনি নোটিশ সুপ্রকাশের
শুধু বন্যা নিয়ন্ত্রণই নয়, পাশাপাশি কৃষিজমিতে সেচের সুযোগও বাড়াবে এই প্রকল্প। গত মে মাসে প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যদিও, সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারি থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এখন নদীবাঁধ উঁচু করার কাজ চলছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেজর ইরিগেশন অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্ট নামে এই প্রকল্পে মোট যা খরচ ধরা হয়েছে, তা বর্তমানে ডলারের বিনিময় মূল্যে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। মোট প্রায় ৪১ কোটি ডলার খরচে প্রকল্প রূপায়ণের চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৪ কোটি ডলার করে ঋণ দেবে বিশ্বব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক। রাজ্য সরকারকে খরচ করতে হবে বাকি প্রায় ১২ কোটি ডলার