অমিতাভ ব্রহ্ম, দোহা: ভিড়েও কত একা হওয়া যায় লিও মেসিকে দেখে বুঝলাম!
সবে খেলা শেষ হয়েছে। সৌদি ফুটবলারদের উৎসব চলছে মাঠে। আর একেবারে উল্টো ছবি আর্জেন্টিনার দিকে। মার্টিনেজ, ওটামেন্দিরা মাঠেই বসে পড়েছেন। আর তিনি, লিওনেল মেসি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন। দৃষ্টি শূন্যে। তিনি কেন, কেউ ভাবেনি আর্জেন্টিনা এগিয়ে থেকেও এভাবে হারবে। আর তাদের গ্যালারি? এতক্ষণ অনেক চিৎকার শোনা যাচ্ছিল সেখানে। এই হারে সেখানেও এক অদ্ভুত নীরবতা।
আরও পড়ুন-আজ জমির পাট্টা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী
কিন্তু খেলার শুরুটা এমন হয়নি। একটা সময় সারা মাঠ ছিল তাঁর দিকে তাকিয়ে। আর তিনি, লিও মেসির নজর ছিল একমাত্র বলের দিকে। দেখছিলাম মনঃসংযোগ কাকে বলে। নিজেকে জাগতিক বিষয়-আশয় থেকে সরিয়ে শুধু পেনাল্টির জন্য তৈরি হচ্ছেন! এই লোক মেসি হবে না তো কে হবে!
খেলার তখন দশ মিনিট হবে বোধহয়। সৌদি গোলকিপারকে সম্পূর্ন অন্ধকারে রেখে বা পায়ের আলতো টোকায় জলে বল জড়িয়ে দিয়ে গ্যালারির দিকে দৌড় লাগালেন এলএম টেন। গ্যালারি উত্তাল। যেদিকে তাকাও শুধু নিল-সাদা জার্সি। ওরা তখন লাফাচ্ছেন। ২-০ এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা। পরে সেই তারাই হেরে গেলে ১-২ গোলে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এতদিন মেট্রোয় পা রাখা যাচ্ছিল। মঙ্গলবার মেট্রো চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনীয় সমর্থকদের দখলে। ভাষা বুঝি না। কিন্তু কানে আসছিল শুধু মেসি-মেসি। এই আর্জেন্টিনা দলে ডি’মারিয়া, রোমেরো, ওটামেন্দি, মার্টিনেজের মতো তারকা রয়েছে। কিন্তু ওরা কেউ মেসি নন। যাঁর একাই মাঠে ৮০ হাজার লোক টেনে আনার ক্ষমতা রয়েছে। টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল আগেই। কিন্তু বিশ্বকাপে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হল আজ, লিও মেসি নামার পর। শুধু শেষটা ভাল হল না। কেউ ভাবেনি আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে হেরে নিজেদের এভাবে বিপদে ফেলবে! মেসি নিজেও নিশ্চয়ই ভাবেননি।
মঙ্গলবার যে লুসাইল স্টেডিয়ামে গ্রুপ সি-র এই ম্যাচ হল, ১৮ ডিসেম্বর সেখানেই বিশ্বকাপ ফাইনাল। আর্জেন্টিনাকে সেখানে দেখা যাবে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। তাদের গ্রুপে মেক্সিকো, পোল্যান্ডের মতো দল রয়েছে। সৌদি ম্যাচ হেরে মেসিরা নিজেই নিজেদের চাপের মধ্যে ফেলে দিলেন। এখন বাকি দুই ম্যাচ তাদের জিততেই হবে।